এমনই দশা রাস্তার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা। পিচের প্রলেপ উঠে গিয়েছে। তার উপরে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় রাস্তার হাল আরও খারাপ হয়েছে। কিন্তু কার কাছে অভিযোগ জানাবেন তা নিয়ে দ্বিধায় বাসিন্দারা। কারণ, রাস্তার উপরে অধিকার দুই ভিন্ন কর্তৃপক্ষের। এই জাঁতাকলে নিউ গড়িয়া সংলগ্ন পঞ্চসায়র রোডের যাত্রীরা প্রতি দিন নাকাল হচ্ছেন।
পঞ্চসায়র রোডের অর্ধেক অংশ কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত আর বাকিটা রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার। ফলে রাস্তাটি সারানো নিয়ে সমস্যা হয় বলে জানালেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তড়িৎ চক্রবর্তী। রাস্তার কিছুটা অংশের অবস্থা যে খারাপ, তা স্বীকার করে নিয়ে তড়িৎবাবু জানান, রাস্তাটির এক দিকে গড়িয়া স্টেশন আর অন্য দিক বাইপাস সংযোগকারী রাস্তায় মিশেছে। তাঁদের অংশে রাস্তা সারানো হলেও কলকাতার দিক ভাঙাচোরাই রয়ে গিয়েছে বলে তড়িৎবাবু জানান। তিনি বলেন, “সম্প্রতি প্রায় সাড়ে ২৭ লক্ষ টাকা খরচ করে রাজপুর-সোনারপুরের অংশে পিচ করা হয়েছে। কলকাতার অংশ আমরা সারাতে পারি না।”
অন্য দিকে, কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রুমকি দাসও রাস্তার বেহাল দশার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “রাস্তাটি সারানোর জন্য পুরসভাকে এবং বরো অফিসেও জানিয়েছি। বলা হয়েছিল সারানো হবে। কিন্তু কবে হবে আমি জানি না।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তাটি এই অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মেট্রো সম্প্রসারণের পরে গত কয়েক বছরে পঞ্চসায়র রোডের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে পূর্ব রেলওয়ের নতুন স্টেশন নিউ গড়িয়া। যাতায়াত ব্যবস্থার এই উন্নয়নের কারণে গত কয়েক বছরে এলাকায় আগের তুলনায় জনবসতিও বেড়েছে। অভিযোগ, গুরুত্ব বাড়লেও, রাস্তার অবস্থার কিন্তু কোনও পরিবর্তন হয়নি।
স্থানীয় বাঘাযতীন পার্কের বাসিন্দা অরূপ ঘোষ জানান, অন্য সময়ে কষ্ট করে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষায় অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। গর্তগুলিতে জল জমে থাকে। ফলে গাড়ি নিয়ে গেলে তাতে চাকা পড়ে সমস্যা তৈরি হয়। অন্য দিকে পূর্ণিমা মণ্ডলের অভিযোগ, “বৃষ্টি পড়লে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। কারণ ওই রাস্তায় হাঁটার জন্য আলাদা করে ফুটপাথ বলে কিছু নেই। একই রাস্তায় গাড়ি আর মানুষকে বিপজ্জনক ভাবে চলাচল করতে হয়। কিন্তু করারও কিছু নেই।” কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”