প্রতীকী ছবি।
এক যুবকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় রহস্য দেখা দিয়েছে। দেড় মাস কেটে গেলেও খোঁজ নেই তাঁর। যুবকটির এক বন্ধুকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, নিখোঁজ যুবককে গঙ্গার ঘাটে ফেলে তিনি দিল্লি চলে গিয়েছিলেন। ঘটনায় নাম উঠে এসেছে এক তরুণীরও। বুধবার রাত পর্যন্ত অবশ্য কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২ সেপ্টেম্বর। মানিকতলার মুরারিপুকুরের বাসিন্দা, বছর সাতাশের রানা ঘোষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি বলে তাঁর মা সীমাদেবীর দাবি। তিনি জানান, ছেলে বাড়ি না ফেরায় খন্নার হাটে রানা যে দোকানে কাজ করেন সেখানে খোঁজ নেওয়া হয়। জানা যায়, ২ তারিখ সন্ধ্যায় সুরজিৎ সাউ নামে এক বন্ধুর সঙ্গে খন্নার হাটের দোকানে গিয়েছিলেন রানা। মুরারিপুকুরেরই বাসিন্দা সুরজিৎ বর্তমানে কাজের সূত্রে দিল্লিতে থাকেন। এর পরে সুরজিৎকে ফোন করে ছেলের ব্যাপারে জানতে চান সীমাদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘সুরজিৎ আমায় ফোনে বলে, সে এক দিনের জন্য কলকাতায় এসেছিল। ছেলের সঙ্গে দেখা করে দু’জনে খন্নার হাটের দোকানে যায়। সেখান থেকে কোথাও বসে মদ্যপান করে গঙ্গার ঘাটে গিয়েছিল। আর কিছু না বলেই তার পরে ফোন কেটে দেয় সুরজিৎ।’’
এর পরেই মানিকতলা থানার দ্বারস্থ হয় রানার পরিবার। তবে ঘটনার তদন্ত করছে বড়তলা থানা। কারণ, ওই থানা এলাকাতেই ঘটনার বেশিরভাগ ঘটেছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। সুরজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, সরশুনার বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে রানার সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই যুবক। ২ সেপ্টেম্বর রাতে সুরজিতের সঙ্গে দেখা করে দু’জনে মদ্যপানের পরে গঙ্গার ঘাটে যান। সেখান থেকে সুরজিৎ ওই তরুণীকে ফোন করেন। সুরজিৎ পুলিশকে বলেছেন, ‘‘মেয়েটি আর সম্পর্ক রাখতে চায় না শুনেই রানা গঙ্গায় নেমে যায়। কোনও কথা শোনেনি। বাধ্য হয়ে আমি ফিরে আসি।’’
যদিও সুরজিতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তদন্তকারীদের। তাঁরা বলছেন, বন্ধু যদি গঙ্গায় নেমে থাকেন তাঁকে উদ্ধার করতে ঘাটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের সে কথা কেন জানালেন না সুরজিৎ? রানার বাড়িতে কিছু না জানিয়ে সে দিনই তিনি দিল্লি চলে গেলেন কেন?
আপাতত সুরজিৎকে কলকাতা ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে।