সুমন সরকার।
দুর্ঘটনার পরে হাসপাতালে গিয়ে নিজেই পুলিশের কাছে পরিজনদের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। খবর পেয়ে পরিজনেরা তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে এসে শুনলেন, নম্বর দেওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম সুমন সরকার (৩৬)। তাঁর বাড়ি রানাঘাটের কুপার্স পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে গাড়িচালকের কাজ করতেন সুমন। তাঁর পরিবারে রয়েছেন মা-বাবা, স্ত্রী ও আড়াই বছরের ছেলে। এ দিন রানাঘাটের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাকর্মীকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে আলিপুরের সেনা হাসপাতালে এসেছিলেন সুমন। ওই ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ঢুকে যাওয়ার পরে গাড়ি রেখে বাইরে খাবার খেতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ে জাজেস কোর্ট রোড ধরে বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলা ১৮বি/১ রুটের বাসের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন সুমন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে নিয়ে আসে।
সূত্রের খবর, সেখানে সুমন নিজেই পুলিশকে তাঁর বাড়িতে যোগাযোগের নম্বর দেন। কিন্তু, ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার সময়েই ওই যুবকের অবস্থার অবনতি হয়। মুহূর্তের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। সুমনের বাবা শঙ্কর ও মা রীতা সল্টলেকে সুকেশ অধিকারীর বাড়িতে পরিচারকের কাজ করেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই হাসপাতালে চলে আসেন সুকেশ। তিনি বলেন, ‘‘ভাবতেই পারছি না, এমন খবর শুনতে হবে।’’ স্বামীর দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছেলে প্রত্যুষকে নিয়ে রানাঘাট থেকে কলকাতায় ছুটে আসেন সুমনের স্ত্রী পূজা এবং পরিবারের অন্য সদস্যেরা।
ওই যুবকের এক আত্মীয় পূর্ণিমা রায় বলেন, ‘‘এত দিন ধরে, এত জায়গায় গাড়ি নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় ওঁকে হারাব, কখনও ভাবিনি।’’ পুলিশ জানায়, বাস ও সেটির চালককে আটক করা হয়েছে।