কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
শহর কলকাতার সৌন্দর্যায়ন ও পরিচ্ছন্নতার লক্ষ্যে ‘কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অ্যাডভার্টাইজমেন্ট পলিসি রেগুলেশন, ২০২২’-এর খসড়া গত বছরেই প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু তার পরে বছর ঘুরে গেলেও এখনও সেই বিজ্ঞাপন নীতি কার্যকর হয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, শীঘ্রই মেয়র পরিষদের বৈঠকে নয়া বিজ্ঞাপন নীতির প্রস্তাব গৃহীত হবে। পরে তা শহর জুড়ে কার্যকর করা হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বিজ্ঞাপনের খসড়া নীতি প্রকাশিত হওয়ার পরে তা পর্যালোচনা করে একাধিক আপত্তির কথা উঠে এসেছিল। তাই কলকাতা ছাড়া দেশের একাধিক মেট্রো শহরের বিজ্ঞাপন নীতি পর্যালোচনা করে ওই বিজ্ঞাপনের খসড়া নীতিতে কিছু সংশোধন করা হয়।
কী আছে সংশোধিত নয়া বিজ্ঞাপন নীতিতে? পুরসভা সূত্রের খবর, নয়া নীতি অনুযায়ী, শহরের বিভিন্ন রাস্তায় থাকা দ্বি-পদযুক্ত বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংগুলি পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে। পরিবর্তে মনোপোল এবং এলইডি আলো ব্যবহার করা হবে। শহরের বড় রাস্তার কয়েকটি সংযোগস্থল ছাড়া কোনও রাস্তার এক কিলোমিটারের মধ্যে পাঁচটির বেশি মনোপোল রাখা যাবে না। পুর বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিক জানান, রাজ্য সরকারের অধীন উড়ালপুল, ফুট ওভারব্রিজ বা স্কাইওয়াকের ওঠানামার পথ বিজ্ঞাপনমুক্ত থাকবে। পরিবর্তে ওই সমস্ত অঞ্চলকে সবুজায়নের কাজে লাগানো হবে। এ ছাড়াও কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক সিগন্যালের খুঁটি, সেকেন্ডারি পোল, ক্যান্টিলিভার পোল, পুলিশ সহায়তা বুথেও কোনও বিজ্ঞাপনের ছোঁয়া থাকবে না। নয়া নীতি অনুযায়ী, এ শহরে মেট্রো রেল, পূর্ব রেল বা অন্য কোনও সংস্থা বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগে পুরসভার থেকে অনুমতি নিতে হবে। পাশাপাশি ওই সমস্ত সংস্থাকে একটি নির্দিষ্ট হারে রাজস্ব দিতে হবে পুরসভাকে।
নীতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পুরসভা এলাকায় কলকাতা বন্দর, পূর্ব রেল, মেট্রো রেল বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা নির্মিত এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা বিজ্ঞাপনী কাঠামোয় নিজ নিজ হোর্ডিং, কিয়স্কের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ব্যবস্থার জন্য পুরসভার অনুমতি নিয়ে দরপত্র ডাকতে হবে। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনে উপার্জিত রাজস্বের অর্ধেক পুরসভার জন্য বরাদ্দ করতে হবে।’’ ওই নীতি অনুযায়ী, হেরিটেজ ভবনের আশপাশে কোনও বিজ্ঞাপন থাকবে না। হোর্ডিংগুলিতে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন না থাকলে তা সাদা ফ্লেক্স দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। বিপজ্জনক পুরনো বাড়িতে কোনও ভাবেই বিজ্ঞাপনের অনুমতি দেওয়া যাবে না। দূষণ ঠেকাতে পিভিসি ফ্লেক্সের বিকল্প হিসাবে পরিবেশবান্ধব কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়াও দু’টি হোর্ডিংয়ের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। হোর্ডিং লাগাতে গাছে পেরেক পোঁতা যাবে না। বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে শহর জুড়ে থাকা ফ্লেক্স, ব্যানার,
কাটআউট উৎসব মিটে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরিয়ে ফেলতে হবে। না-হলে পুরসভা ওই সমস্ত সংস্থার থেকে মোটা টাকা জরিমানা আদায় করবে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘নয়া বিজ্ঞাপনের খসড়া নীতি মেয়র পরিষদের বৈঠকে গৃহীত হওয়ার পরে শীঘ্রই তা শহর জুড়ে কার্যকর হবে।’’