—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কলকাতায় বাড়ি। রয়েছে অন্য সম্পত্তিও। কিন্তু সেই বাড়ি ছেড়ে মাসের পর মাস হোটেলে থাকছিলেন মা এবং মেয়ে। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা হোটেলের ভাড়া বাবদ খরচ হচ্ছিল। সম্পত্তি বিক্রি করে সেই ভাড়া মেটাচ্ছিলেন তাঁরা। কিড স্ট্রিটে মহিলার রহস্যমৃত্যুর তদন্তে উঠে আসছে এমনই একের পর এক নতুন তথ্য। যাতে আরও ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য।
হরিদেবপুরের ব্যানার্জিপাড়ার বাসিন্দা পলি মিত্র। বয়স আনুমানিক ৫৫ থেকে ৬০-এর মধ্যে। কিড স্ট্রিটের একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর কন্যা ৩৪ বছরের ঈশিতা মিত্রকেও হোটেলের ওই ঘর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মা এবং মেয়ে দু’জনেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। মায়ের চেষ্টা সফল হলেও কন্যা বেঁচে গিয়েছেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পলি এবং ঈশিতা গত ৮ জুন থেকে ওই হোটেলে থাকছিলেন। বৃহস্পতিবারই বেলা ১২টায় তাঁদের হোটেল ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সকালে দরজা ধাক্কা দিলে কোনও উত্তর আসেনি। এর পরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। নিউ মার্কেট থানার পুলিশ গিয়ে মহিলার দেহ উদ্ধার করে। ঘর থেকে সুইসাইড নোটও মিলেছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মা এবং মেয়ে দু’জনেই অর্থকষ্টে ভুগছিলেন। সেই সঙ্গে অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁদের। ঈশিতার বেশ কিছু অন্য রোগও ছিল। ছয় বছর আগে পলির স্বামী মারা যান। তার পর থেকেই তাঁদের পরিবারের কোনও আয়ের সংস্থান ছিল না। আর্থিক সঙ্কটে সম্পত্তিও বিক্রি করতে হয়েছিল তাঁদের।
পুলিশ জানতে পেরেছে, গত চার মাস ধরেই বাড়ির বাইরে পলি এবং ইশিতা। শহরের বিভিন্ন হোটেলই ছিল তাঁদের ঠিকানা। সম্পত্তি বিক্রির টাকা দিয়ে হোটেলের ভাড়া মেটাচ্ছিলেন, তার পর হোটেলেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। মাস ছয়েক আগে পলি গোবরডাঙায় তাঁর বাপের বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে ছ’লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন।
বাড়ি ছেড়ে হোটেলে থাকছিলেন কেন, এখনও সেই রহস্যের সমাধান হয়নি। কিড স্ট্রিটের যে হোটেলে তাঁরা থাকছিলেন, তার দৈনিক ভাড়া ছিল সাড়ে চার হাজার টাকা। সম্প্রতি হোটেলের ভাড়া বাবদ পলি ১,৯৮,০০০ টাকা কর্তৃপক্ষকে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঈশিতার চিকিৎসা চলছে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে পুলিশ।