বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাড়ির নাম বুর্জ খলিফা। দুবাইয়ের সেই বহুতলকে নিয়ে চর্চার শেষ নেই। কিন্তু সবচেয়ে বড় অফিস? এত দিন সেই মুকুট ছিল আমেরিকার মাথায়।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবন বলতে এত দিন সকলে চিনতেন পেন্টাগনকে। ভার্জিনিয়াতে বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরের এই অফিস।
কিন্তু এ বার পেন্টাগনকে ছাপিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অফিস ভবনের তকমা ছিনিয়ে নিল ভারত। গুজরাতের একটি অফিস এই শিরোপা পেয়েছে।
গুজরাতের সুরাতে গড়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস। যার নাম সুরাত ডায়মন্ড বুর্স। হিরে তৈরির যাবতীয় কাজ এই অফিসে হয়।
সিএনএন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সুরাত ডায়মন্ড বুর্স একটি ১৫ তলা অফিস ভবন। ৩৫ একর এলাকা জুড়ে এই অফিসটি তৈরি করা হয়েছে। আকারে এটি পেন্টাগনের চেয়েও বড়।
সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের নির্মাতারা জানিয়েছেন, অফিসটিতে মোট ৬,৬০০০০ বর্গমিটার কাজের জায়গা (ফ্লোর এরিয়া) রয়েছে। পেন্টাগনে কাজের জায়গা ৬,২০০০০ বর্গমিটার।
সুরাতের অফিসটিতে কর্মীর সংখ্যাও প্রচুর। পেন্টাগনে ২৬ হাজার কর্মচারী কাজ করেন। কিন্তু সুরাত ডায়মন্ড বুর্স প্রায় ৬৫ হাজার মানুষের কর্মস্থল।
২৬৮ মিটার উঁচু সুরাত ডায়মন্ড বুর্স গুজরাতের মুকুটে নতুন পালক যোগ করেছে। চলতি বছরেই এই অফিস ভবনটির উদ্বোধন করা হবে। শুরু হয়ে যাবে কাজও।
হিরের ব্যবসার জন্য সুরাত বরাবরই বিখ্যাত। খনি থেকে তুলে আনা হিরে কেটে এখানেই বাজারের উপযোগী করে তোলা হয়। তৈরি হয় হিরের গয়নাও।
বিশ্বের ৯০ শতাংশ হিরে কাটা হয় এই সুরাতে। সেখানেই মাথা তুলেছে সবচেয়ে বড় অফিস। হিরে কাটা, পালিশ করা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক লেনদেন, সব কাজই হবে এই এক ছাদের তলায়।
এত দিন সুরাত থেকে হিরের ব্যবসার জন্য অনেককে মুম্বই যাতায়াত করতে হত। সুরাত ডায়মন্ড বুর্সে এক ছাদের নীচে সব বন্দোবস্ত হওয়ায় সেই সমস্যা আর হবে না।
অফিস ভবনটি তৈরি করেছে এক বিখ্যাত স্থাপত্যনির্মাণ সংস্থা। প্রকল্পের সিইও মহেশ গাধভি জানিয়েছেন, সুরাত ডায়মন্ড বুর্স গুজরাতের হিরের বাজারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অফিস ভবনটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৩,২০০ কোটি টাকা। ১৫ তলার বহুতলে কর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রয়েছে মোট ১৩১টি লিফ্টের ব্যবস্থা।
নির্মাতাদের দাবি, এই অফিসটি ঠান্ডা রাখার জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে বায়ু চলাচলের বন্দোবস্ত রয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে সৌরশক্তিও। পরিবেশ রক্ষার যাবতীয় নিয়ম মেনেই বহুতলটি তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি নির্মাতাদের।
সুরাত ডায়মন্ড বুর্সের প্রশংসা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মতে, সুরাতে হিরের ব্যবসা কেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তার উদাহরণ এই বিশাল অফিস ভবন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিসটির উদ্বোধন করবেন গুজরাতের ঘরের ছেলে নরেন্দ্র মোদী। আগামী নভেম্বর মাস থেকে এই অফিসে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।