প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় যখন রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বইছে, ঠিক সেই সময়েই এ বার শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ‘আরজি কর করে দেব’ বলে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। রোগীর পরিবারের এই ধরনের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই মহিলা চিকিৎসক তাঁর সহকর্মীদের বিষয়টি জানান। তার পর তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অভিযোগও জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ফুলবাগান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। রোগীর পরিবারের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর এক মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল। সেই রোগীর পুত্র এবং তাঁর বন্ধুরা চিকিৎসককে হেনস্থা করেন। তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, মহিলা চিকিৎসককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন এবং হুমকিও দিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে সাড়ে ১০টা নাগাদ। এক চিকিৎসক সংগঠন এবং হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, হাসপাতালের আইসিইউয়ের সামনে ওই মহিলা চিকিৎসককে হুমকি দেওয়া হয় ‘ইহাঁ পে আরজি কর হো যায়েগা’! এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে সরব হন হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁরা দাবি করেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করলে রোগী ভর্তি নেওয়া হবে না। যদিও পুলিশ তৎপরতার সঙ্গেই পদক্ষেপ করে এবং এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আরজি করে ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্য জুড়ে আন্দোলন চলছে, কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে যখন আওয়াজ উঠছে, এই আবহে শহরেরই এক বেসরকারি হাসপাতালে আরজি কর-কাণ্ডের তুলনা টেনে হুমকির ঘটনায় আতঙ্ক বেড়েছে।
আরজি করের ঘটনার পর পরই এমনই হুমকির অভিযোগ উঠেছিল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে মহিলা চিকিৎসককে ‘আরজি কর করে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার পরই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চিকিৎসকের দাবি, “আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আরজি করে (হাসপাতাল) কি হয়েছে জানেন তো?” চিকিৎসক তখনই হাসপাতালে বিষয়টি জানান।