RG Kar Financial Irregularity

রবিতে সিবিআই নিশানায় সোমও! আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের এক শিক্ষকের বাড়িতে তল্লাশি

রবিবার সকালে দেবাশিস সোমের কেষ্টপুরের বাড়িতে হানা দিয়েছে সিবিআইয়ের একটি দল। তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের ডেমনস্ট্রেটর পদে রয়েছেন দেবাশিস।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৪ ১৩:৩৩
Share:

আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের ডেমনস্ট্রেটর দেবাশিস সোম। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের তদন্ত করতে রবিবার সকাল সকাল নিজ়াম প্যালেস থেকে বেরিয়েছে সিবিআইয়ের কয়েকটি দল। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়িতে গিয়েছে তারা। সিবিআইয়ের আরও একটি দল রবিবার সকালে গিয়েছে কেষ্টপুরে। সেখানে রয়েছে হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের কর্তা দেবাশিস সোমের বাড়ি। দেবাশিস আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। ওই বিভাগের ডেমনস্ট্রেটর পদে রয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিলেরও সদস্য দেবাশিস। তিনি রয়েছেন কলেজের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) কমিটিতেও। রবিবার সকাল থেকে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরে বিকেলে দেখা যায় সোমকে একটি গাড়ি নিয়ে বাড়়ি থেকে বেরোতে। তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই আরও একটি গাড়িতে যেতে দেখা যায় সিবিআই কর্তাদেরও।

Advertisement

আরজি কর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বলছেন, দেবাশিস সন্দীপের অত্যন্ত ‘ঘনিষ্ঠ’। হাসপাতালে তাঁর নিজের বিভাগের ঘরে নাকি তিনি বসতেন না। সন্দীপের ঘরের পাশে একটি ঘর তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল। সেখানে বসেই কাজ চালাতেন। ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ তিনি ‘নিয়ন্ত্রণ’-এর চেষ্টা করতেন বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ। তবে আরজি কর চত্বরে দেবাশিসকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা সকলেই একটি বিষয়ে একমত— দেবাশিস ‘বুদ্ধিমান’। দুর্নীতির অভিযোগে নাম থাকলেও সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর যোগ না-ও থাকতে পারে। তিনি কিছু করে থাকলে, আড়াল রেখেই করেছেন, মত পরিচিতদের।

দেবাশিসের সঙ্গে কাজ করেছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন এক আধিকারিক জানান, দেবাশিস বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের পিঠ বাঁচিয়ে চলতে জানেন। কাউকে আড়াল করার মানসিকতা তাঁর নেই। সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তবে কি তিনি কারও নাম নেবেন? সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না পরিচিতেরা।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে প্রাপ্ত একটি নথিতে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে আরজি কর থেকে কোচবিহারে বদলি হয়েছিলেন দেবাশিস। সেখানকার মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের ডেমনস্ট্রেটর করা হয়েছিল তাঁকে। ওই সময়ে এক বার সন্দীপেরও বদলি হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন আরজি করের লোকজন। সন্দীপ পরে আবার আরজি করে ফিরে আসেন এবং তার পর পরই কোচবিহার থেকে আরজি করে আবার চলে আসেন দেবাশিসও। অন্য একটি নথিতে দেখা যাচ্ছে, আরজি করের দেবাশিস ২০২৩ সালে পুত্রের সঙ্গে দেখা করার জন্য বেলজিয়ামে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। তাঁকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি, তাতে দেবাশিসের নাম রয়েছে। অভিযোগ, হাসপাতালে নানা বেআইনি কাজ এবং আর্থিক নয়ছয়ের সঙ্গে ‘যুক্ত’ তিনি। এ বিষয়ে প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান আখতার। পরে স্বাস্থ্য ভবনের দৃষ্টি আকর্ষণও করেন। তবে সুরাহা না হওয়ায় তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে আদালত। সিবিআই শনিবার এফআইআর করে রবিবার থেকে অভিযান শুরু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement