Kolkata Winter

কলকাতার কড়চা: শীতশহরে উত্তাপ দেয় যারা

সল্ট লেকে বইমেলার এখনও দেরি তো কী, বেহালা থেকে ঢাকুরিয়া বা সোনারপুর সেজে উঠেছে ছোট ছোট বইমেলায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৭
Share:

কলকাতা ময়দান। —ফাইল চিত্র।

বাজে আলোয়ানের চেয়ে খদ্দরের শাল দেখতে সুন্দর, দামে সস্তা এবং গরম।” তাই ডিসেম্বরের কলকাতায় খদ্দরের শাল-সহ ‘সস্তায় মনের মতন, শীতবস্ত্রের বিপুল আয়োজন’ এসে দেখার ও কেনার বিজ্ঞাপন দিয়েছে কর্নওয়ালিস স্ট্রিটের এক বিপণি— একশো বছর আগে, আজকের দিনের আনন্দবাজার পত্রিকা-য়। হায়, সেই শীতও নেই, সেই খদ্দরের শালও না। ময়দানে কুয়াশা নামে আজও, ভোরের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল নাগরিক পুরু ধোঁয়াশা থেকে মাথা তোলে একটু একটু করে (ছবি), ক্যালেন্ডারে ভরপুর শীতকাল। কিন্তু ভোর আর সন্ধের হিম-হিম শিরশিরানিটুকু বাদ দিলে বাকি দিনমানে ঠান্ডা কোথায়? সে নাকি আছে কেবল নতুন রেকের মেট্রোয়!

Advertisement

শীতকাল কবে আসবে, কবির এ প্রশ্নের উত্তর এই মহানগর জানিয়ে দেয় অন্য কৌশলে। এ যেন একটু রহস্য করে, একটু ঘুরিয়ে বলা: যখন দেখবে হঠাৎ বাজারের আনাজে কে যেন মাখিয়ে দিয়ে গেছে তরতাজা পুরুষ্টু সবুজের পরত, গৃহস্থের বাজারের থলে থেকে বেরিয়ে আছে একগুচ্ছ ঝকঝকে পেঁয়াজকলি, তখন বুঝতে হবে, শীত এসেছে। মিষ্টির দোকানে গুড়ের রসগোল্লা আর অফিসপাড়ায় বাবুদের টিফিন-পাতে জয়নগর বলে কোন্নগর বা কোন নগরের মোয়া চালিয়ে দেওয়ার অবাধ ছাড়পত্রটি মেলে যে ঋতুতে, সেই তো কলকাতার শীত! বিজ্ঞজন মাথা নাড়িয়ে যখন নিদান দেন, ‘সব নলেনই ঝোলা, কিন্তু সব ঝোলাগুড়ই নলেন নয়’, বুঝতে হবে, এই প্রবচন শীত ছাড়া সম্ভবে না।

পুজোর কলকাতা আবেগ উচ্ছ্বাসে সে এক রকম। সেখানেও দুর্গাপুজো ঘিরে শিল্প-চর্চা আছে বটে, তবে ডিসেম্বর আর শীতের কলকাতা মানে একটা অন্য ব্যাপার: গোটা শহরটাই যেন তখন সংস্কৃতি-চর্চার কর্মশালা আর সংগ্রহশালা। এক দিকে সিনেপ্রেমীদের মন খারাপ কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ফুরিয়ে গেল বলে, অন্য দিকে চিত্রকলা-সহ শিল্পচর্চার অনুরাগীরা উত্তেজিত, এই প্রথম বার কলকাতায় হচ্ছে শিল্পের মহোৎসব, ‘বেঙ্গল বিয়েনেল’— অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস, গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালা, বিড়়লা অ্যাকাডেমি, কেসিসি, আর্টস একর, গ্যালারি চারুবাসনা-সহ নানা জায়গায়।

Advertisement

সল্ট লেকে বইমেলার এখনও দেরি তো কী, বেহালা থেকে ঢাকুরিয়া বা সোনারপুর সেজে উঠেছে ছোট ছোট বইমেলায়। একাধিক নাট্যমেলার বাদ্যি বেজে গেছে এর মধ্যেই, নাটকপাড়া আর ফেসবুক জুড়ে এখন তারই চর্চা: কবে কোথায় কোন নাটক। সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমি পথ দেখিয়েছে আগেই, এ বার একে একে আসবে শহরের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর ও উৎসবগুলি। সঙ্গীতপ্রেমীরা শুরু করেছেন খোঁজখবর: কোন নবীন-নবীনারা চমৎকার গাইছেন এখন, কার বাজনার হাতটি কত মিঠে!

আর ময়দানি ক্রিকেট? নেহাত টিম ইন্ডিয়া এখন ভিন দেশে সফর করছে, তা নইলে ডিসেম্বরের ইডেনে টেস্ট ম্যাচ দেখার যে ধ্রুপদী আনন্দ, তার তুলনা আর কিসে! এই সবই শীতের কলকাতার ক্যালেইডোস্কোপে এক-একটি প্রিজ়ম— খেলা সাহিত্য গান খাবার মেলা ছবি উৎসব। জেগে থাকে মনখারাপও: সার্কাসের তাঁবু আর সেই লোক টানে না, ওয়েলিংটনে শীতকাপড়ের পসরাওয়ালারা ক্ষীয়মাণ। তবু, যেটুকু উত্তাপ মেলে!

ন্যায়ের পক্ষে

ন্যায়বিচার যখন প্রকারান্তরে হয়ে দাঁড়ায় বিজয়ীর তর্জন, তখন তা ন্যায় বা বিচার, এর কোনওটাই কি? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে গঠিত টোকিয়ো যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে ভারতের প্রতিনিধি, তৎকালীন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাধাবিনোদ পাল (ছবি) এমনই মত দিয়েছিলেন যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে। আন্তর্জাতিক পরিসরে ন্যায়বিচার, ‘শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ’-এর আইনি ধারণা বিষয়ে তাঁর বিশ্লেষণ আজও শিরোধার্য আইনের ছাত্রদের; জাপান-সহ গোটা বিশ্বের শ্রদ্ধার্হ। তাঁর স্মরণে ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস-এ সম্প্রতি হয়ে গেল আন্তর্জাতিক সম্মেলন, ‘জাস্টিস ড. রাধাবিনোদ পাল অ্যান্ড কোয়েস্ট ফর জাস্টিস: হিস্টরিক্যাল পার্সপেক্টিভ অ্যান্ড কনটেম্পোরারি ইমপ্লিকেশনস’। ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টের মহামান্য বিচারপতিরা, কলকাতায় জাপানের কনসাল জেনারেল, রাধাবিনোদ পালের প্রপৌত্র-সহ বিশিষ্টজন।

তারার মেলা

দুই বাংলার মৈত্রীই প্রাণ গঙ্গা যমুনা নাট্য উৎসবের। ‘অনীক’-এর আয়োজনে সাতাশতম পার্বণলগ্নটি সামনে, এই প্রথম বার নেই বাংলাদেশের কোনও নাট্যদল। তবে না থেকেও আছে, অনীকের প্রযোজনায় সৈয়দ শামসুল হক রচিত বুকঝিম এক ভালবাসা থাকছে মঞ্চে। হাওড়া সৃজন-এর নিবেদনে রামকিঙ্কর বেজের জীবননির্ভর নাট্য কলের বাঁশি, ইচ্ছেমতো-র হেনরি কোথায়, এ ছাড়াও মৃতাশৌচ, সূর্যশিকার, অশ্বখুরের ধুলো, সত্যবচন, পিঙ্কি, কান কাটা রাজার দেশে। এই সবই তপন থিয়েটারে, আগামী ১৫-২১ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় পর্যায় মধ্যমগ্রাম নজরুল শতবার্ষিকী সদনে ২২-২৯, সেখানেও তারার মেলা: থাকছে বাইশে আগস্ট, লণ্ঠন সাহেবের বাংলো, ধর্মাবতার, আক্ষরিক, খেলাঘর, বিনোদিনী অপেরা, নবান্ন-র মতো নাটক।

সহজ যে জন

শ্রীরামপুর স্টেশনে কংক্রিটের প্ল্যাটফর্মে একাকী মহুয়া গাছকে দেখে লেখা কবিতা পরে হয়ে উঠল গান। লোকশিল্পী থেকে ব্যান্ডের গানের দল, কে না গায়নি! নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রয়াত হলেন এই কবিতার রচয়িতা অরুণ চক্রবর্তী, কত বার কত জায়গায় যে তাঁকে বলতে হত এই ‘ইতিহাস’! শিবপুর বি ই কলেজের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রূপে নয়, তাঁকে সবাই চিনত লেখক, কবি, পরিবেশকর্মী রূপে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল ৫টা থেকে রবীন্দ্র সদনে ত্রয়োদশ ‘সহজিয়া উৎসব’ নিবেদিত তাঁরই স্মৃতিতে। কথায় গানে থাকবেন শুভেন্দু মাইতি রঞ্জন প্রসাদ স্বপন বসু লক্ষ্মণ দাস বাউল কার্তিক দাস বাউল রীণা দাসী মনসুর ফকির-সহ বহু গুণী শিল্পী; ‘সহজিয়া সম্মান’-এ ভূষিত হবেন মুর্শিদাবাদের প্রবীণ লোকশিল্পী খুদাবক্স ফকির ও স্বপন বসু।

রজতরেখা

‘একটি পরিবার, একটি গ্রন্থাগার’। এই ভাবনা সামনে রেখে ১৯৯৮ সালে শুরু হয় বেহালা বইমেলা। এ বছর পড়ল পঁচিশ বছরে, কোভিডের দু’টি বছরে সম্ভব হয়নি। রজতজয়ন্তী বর্ষের উদ্‌যাপন শুরু হল গতকাল, ২২ ডিসেম্বর অবধি চলবে বড়িশা হাই স্কুলের মাঠে। ‘বন্দে মাতরম্‌’ গানের সাধর্শতবর্ষ স্মরণে নিবেদিত এই বইমেলা, সেই সঙ্গে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের জন্মদ্বিশতবর্ষ, ঋত্বিক ঘটক সলিল চৌধুরী সমরেশ বসুর জন্মশতবর্ষ, জীবনানন্দ ও বনফুলকে মেলায় স্মরণ করবেন বিশিষ্ট আলোচকেরা, ১৫ থেকে ২১ ডিসেম্বর নানা দিনে। রয়েছে ছোট পত্রিকার প্যাভিলিয়ন, অবন ঠাকুরের নামাঙ্কিত শিল্প শিবিরও। একটি দিন পালিত হবে ‘বিদ্যালয় দিবস’ হিসাবে।

চার দশক

“এ বছরের উৎসব-ভাবনার কেন্দ্রে ‘গ্রুপ থিয়েটার ও নান্দীকার’। গ্রুপ থিয়েটার শুধু এক ‘কনসেপ্ট’ নয়, নাট্যশিল্পের চালিকাশক্তিও; তা নিয়েই প্রদর্শনী,” নান্দীকার-এর ৪১তম জাতীয় নাট্যমেলা প্রসঙ্গে বলছিলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। ১৯৮৪-তে কলকাতায় শুরু, দেশের নানা প্রান্ত থেকে নাটক নিয়ে আসতেন দিকপাল অভিনেতৃ নির্দেশকেরা। উৎসব এ বছর ২০-২৫ ডিসেম্বর অ্যাকাডেমি মঞ্চে। অঞ্জন দত্তের নাটক আরও একটা লিয়ার দিয়ে শুরু। থাকছে সীগাল, অসম-এর প্রযোজনা আনসিউন। বাকি দিনগুলোয় নান্দীকার-এর পাঞ্চজন্য, মাধবী, রাণী কাদম্বিনী, এক থেকে বারো, মানুষ, যত্নে রেখো; এবং সাম্প্রতিকতম নবান্ন। উৎসবের শেষ দিনে রয়েছে কচিকাঁচাদের নাটক। “নান্দীকার সর্বদা নতুন প্রতিভা সামনে তুলে আনায় বিশ্বাসী,” খেয়াল করিয়ে দিলেন সোহিনী সেনগুপ্ত।

মুকুটে নতুন

বিজ্ঞানের নানা শাখায় ভারতীয় নারীদের কৃতি ও কীর্তি বিপুল, কিন্তু তা নিয়ে কথা হয় কম। এতই কম যে, আজকের প্রজন্ম তাঁদের চেনে কি না, বা তাঁদের সম্পর্কে কতটা জানে, তা নিয়ে ধন্দ জাগে। এই ভাবনা থেকেই বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ম (বিআইটিএম) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি তাঁদের প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠা করলেন দশ জন ভারতীয় মহিলা বিজ্ঞানব্যক্তিত্বের ফাইবার গ্লাস মডেল (ছবি)। কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, বিভা চৌধুরী, অসীমা চট্টোপাধ্যায়, ইরাবতী কার্ভে, রাজেশ্বরী চট্টোপাধ্যায়, অর্চনা শর্মা, কমল রণদিভে, দর্শন রঙ্গনাথন, অন্না মণি, ই কে জানকী আম্মালকে দেখে নতুন প্রজন্ম প্রাণিত হোক বিজ্ঞানের নানা শাখায় পড়াশোনা ও গবেষণায়, এটাই উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে বিআইটিএম-এ খুলে গেল ‘টেলিভিশন গ্যালারি’ এবং ‘ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডিজিটাল আর্কাইভ’ও— মুকুটে নতুন পালক। ঘুরে দেখা দরকার সবার।

অন্য রূপে

এক দিকে শিল্পাচার্য, কলাভবনের প্রধান, অন্য দিকে সরস চিত্র-আঁকিয়ে, রঙ্গপ্রিয় মানুষ। মূলত আনন্দমেলায় বিক্রি করে কলাভবনের জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নন্দলাল বসু এঁকেছিলেন এক গুচ্ছ কার্টুন, ছবির বিষয় তৎকালীন শান্তিনিকেতনের মানুষজন। বিধুশেখর শাস্ত্রী কালীমোহন ঘোষ দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুররা সেই সব ছবিতে ভিন্ন রূপে। শিল্পী নিজেও হাজির, কোথাও তিনি নৃত্যশিল্পী (ছবি), কোথাও রঙ্গমঞ্চে অভিনেতা। বাস্তব থেকে বিচ্যুতি সৃষ্টি করেছে নিখাদ হাস্যরস; হাসি-ঠাট্টার ফাঁকে আশ্রমিকদের সৌহার্দের খবরও জানায় ছবিগুলি। মূলধারার শিল্প-ইতিহাসের বয়ানে প্রায়-উপেক্ষিত কার্টুন পোস্টার ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে চলেছেন শুভেন্দু দাশগুপ্ত, সেই ধারাতেই নন্দলালের ভিন্নরীতির ছবি নিয়ে লিখেছেন বই, অন্য নন্দলাল। গত ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিড়লা অ্যাকাডেমি লাইব্রেরিতে এই বইটির সূত্রে বললেন তিনি, অ্যাকাডেমির সংগ্রহে থাকা নন্দলালের চিত্রিত পোস্টকার্ডের সম্ভারও দেখা গেল।

বিকল্প যাপন

শীত এসেছে। পিকনিকে গিয়ে সবুজের মাঝে কদর্য বর্জ্য ফেলে আসার সময়টাও হাজির। সবাই যদি নিজের খাবারের থালা-কাপ নিজেরাই নিয়ে যেত! চাইলেই পারা যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কৃত্রিম আলো না জ্বালিয়েও বাঁচা যায় দিব্যি। ‘বিকল্প যাপনের সন্ধানে’ ডাক দিয়েছে ‘গোত্রহীন দমদম’, আগামী কাল দমদমে দিনভর নানা আয়োজন— পরিবেশ ও সুস্থ যাপন ঘিরে। সকাল ১১টায় স্টেশন সংলগ্ন দিশারী ক্লাবে ছোটদের ‘থিয়েটার গেম’। সঙ্গে থাকবে বইয়ের টেবিল: কেউ বসে বই পড়তে পারেন, চাইলে কেনাও যাবে। দুপুর দু’টো থেকে পথিক সংঘ ক্লাবে ছোট ছবির প্রদর্শন, গান শোনাবে ‘আলোর অপেরা’। বিকেল ৫টা থেকে পরিবেশ বিষয়ক দু’টি আলোচনা: ‘যদি বাঁচাতে চাই তবে?’ আর ‘নিজেকে বদলাই, পরিবেশকে নয়’। সন্ধ্যা ৭টায় নবারুণ ভট্টাচার্যের ছোটগল্প থেকে ‘অবশিষ্ট’ প্রযোজিত নাটক মহাযানের আয়না। নাটকের দল মঞ্চের বাইরেও জীবনকে গাঁথছে সুন্দর ভাবনায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement