Garden Reach Building Collapse

গার্ডেনরিচের ভাঙা বহুতল বেআইনি, প্রোমোটারকে গ্রেফতারের নির্দেশ ববির, টানলেন বাম আমলকেও

গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়া বহুতলের ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও অনেকে আটকে আছেন। ফিরহাদ হাকিম জানান, তাঁদের অনেকের সঙ্গে কথা বলছেন উদ্ধারকারীরা। দেওয়া হচ্ছে জল, অক্সিজেনও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৪
Share:

গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।

গার্ডেনরিচে পাঁচ তলা বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন কলকাতার মেয়র তথা এলাকার বিধায়ক ফিরহাদ ওরফে ববি হাকিম। ঘটনাস্থলে সারা রাত ছিলেন তিনি এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। বহুতলটি যে বেআইনি ভাবে তৈরি করা হচ্ছিল, তাঁরা মেনে নিয়েছেন। ফিরহাদ জানিয়েছেন, এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। অনেকে ভিতরে আটকে আছেন। তাঁদের কারও কারও সঙ্গে কথাও বলছেন উদ্ধারকারীরা। দেওয়া হচ্ছে জল, অক্সিজেন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ এবং আহতদের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

সোমবার সকালে ফিরহাদ বলেন, ‘‘আমি সারা রাত ছিলাম। দু’জন মারা গিয়েছেন। এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। যাঁরা আটকে আছেন, দু’চার জনের সঙ্গে উদ্ধারকারীদের কথা হচ্ছে। জল এবং অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কংক্রিটের চাঙড়ের নীচে আর কারা আটকে আছেন, কেউ জানে না। একটা একটা করে চাঙড় সরিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

ফিরহাদ জানিয়েছেন, রাতে যে সময়ে বহুতলটি ভেঙে পড়ে সেই সময়ে পাশের টালির চালের বাড়িগুলিতে মোট ২১ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট ১৩ জনকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। সাত জন স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

Advertisement

তৎপরতা সত্ত্বেও প্রাণহানি রুখতে পারলেন না, আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে মেয়রের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘টালির চালের ছোট ছোট বাড়ির উপর বহুতল ভেঙে পড়েছে। যাঁরা আহত, সকলেই গরিব মানুষ। কেউ কেউ ওখানে আড্ডা মারতে এসেছিলেন। খুবই বেদনাদায়ক ঘটনা। আমরা ওঁদের পাশে আছি। সারা রাত থেকেও দু’জনকে বাঁচাতে পারলাম না, এটাই আক্ষেপ।’’

গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া বহুতলটি যে বেআইনি ভাবে তৈরি করা হচ্ছিল, মেনে নিয়েছেন মেয়র। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় বাম আমল থেকে বেআইনি নির্মাণ চলছে। ব্যাখ্যা দিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এ সব এলাকায় বাম আমল থেকে বেআইনি নির্মাণ চলছে। কারণ, সে সময়ে প্রশাসনের কাছ থেকে নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যেত না। অনুমতি জোগাড় করতে অনেক হেনস্থা হতে হত। বিএলআরও অফিসে গিয়ে পায়ের চটি ক্ষয়ে যেত। তাই প্রোমোটারেরা বেআইনি নির্মাণের পথে হাঁটতেন। আমরা আসার পর এই কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছি। তা-ও কেন কিছু কিছু লোক বেআইনি নির্মাণ করছেন, জানি না।’’ ওই বহুতলের প্রোমোটারকে অবিলম্বে গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। সেই সঙ্গে ভাঙা বহুতল এবং পাশের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের পরামর্শ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

ফিরহাদ জানান, বর্তমানে উদ্ধারকাজ কিছুটা শ্লথ করা হয়েছে। তাড়াহুড়ো করে কংক্রিটের চাঙড় সরানোর কাজ করলে ভিতরে যাঁরা আটকে আছেন, তাঁরা আরও চোট পেতে পারেন। সেই কারণেই বুঝে বুঝে একটি একটি করে চাঙড় সরিয়ে দেখা হচ্ছে নীচে কী আছে।

প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কী ভাবে বেআইনি নির্মাণ চলছে? এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে দোষ দিতে রাজি নন ফিরহাদ। বলেন, ‘‘কোন গলিতে কী বেআইনি ভাবে তৈরি হচ্ছে, সেটা কাউন্সিলর জানবেন কী ভাবে? এটা দেখা তাঁর কাজ নয়। আধিকারিকদের কাজ। নিঃসন্দেহে প্রশাসনকে আরও কড়া হতে হবে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। আপাতত যাঁরা ভিতরে আটকে আছেন, তাঁদের উদ্ধার করা আমাদের অগ্রাধিকার।’’

ডিজি দমকল অভিজিৎ পাণ্ডে বলেন, ‘‘এমন ভাবে বহুতলটি ভেঙে পড়েছে, উদ্ধারে সময় লাগছে। উদ্ধার বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ৮৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। সাত জন ভিতরে আটকে আছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা চলছে। জল, অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement