পাত পেড়ে: লেদার কমপ্লেক্স থানার উদ্যোগে খাওয়ানো হচ্ছে দরিদ্র মানুষদের। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে দু’বেলা গ্রামের দুঃস্থ মানুষদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করল কলকাতা পুলিশের লেদার কমপ্লেক্স থানা। বুধবার থেকে ওই ব্যবস্থা চালু হল বলে থানার তরফে জানানো হয়েছে।
ওই থানার অন্তর্গত বেদেরআইট ও সোনাটিকারি গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্র। কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৩) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। তবে লেদার কমপ্লেক্স থানার উদ্যোগ অভিনব। বুধবার দু’টি গ্রামের দু’হাজার মানুষকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বসিয়ে খাওয়ানো হল।’’
বেদেরআইট ও সোনাটিকারি গ্রামের দু’টি জায়গায় এ দিন সকাল থেকেই রান্না শুরু হয়। শামিয়ানা টাঙানো থেকে শুরু করে রান্নার গ্যাস, খাদ্য সামগ্রী জোগাড় করা— সবই করেছেন লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশকর্মীরা। এমনকি পোশাক পরা অবস্থায় খুন্তি নাড়তেও দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের। দুপুরে খেতে আসেন গ্রামবাসীরা। দুপুরের খাদ্য তালিকায় ছিল খিচুড়ি, চাটনি। রাতে লুচি, আলুর তরকারি।
পুলিশের দাবি, খাওয়া-দাওয়া চলার সময়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব যাতে বজায় থাকে সে দিকে খেয়াল রাখা হয়েছিল। এ দিন দুপুরে খেতে আসা, বেদেরআইট গ্রামের দিনমজুর রমেন নস্কর বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের কথা এই সময়ে মনে করায় আমরা খানিকটা স্বস্তি পেলাম।’’ তবে বারবার শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বলা হলেও এ ক্ষেত্রে কখনও কখনও সেই নির্দেশিকা লঙ্ঘন হতে দেখা গিয়েছে।
লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশকর্মীরা জানান, গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে রান্নার জ্বালানিটুকুও নেই। তাই দু’বেলা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশে দাঁড়িয়ে অর্থ সাহায্য করছে স্থানীয় ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ খান বলেন, ‘‘এই সময়ে দুঃস্থদের দিকে সকলেরই হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত।’’ পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার থেকে দু’বেলা ভাত, তরকারি, ডাল ছাড়াও এক বেলা করে আমিষ খাবারওদেওয়া হবে। গ্রামবাসীরা যাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সে দিকে আরও বেশি করে খেয়াল রাখা হবে।