—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে ডেঙ্গির মরসুম শুরু হয়েছে। গত বারের মতো এখনও পরিস্থিতি ভয়াবহ না হলেও শহর তো বটেই, জেলাতেও কম-বেশি মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সেখানেই চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ, ডেঙ্গির উপসর্গেরও বদল ঘটছে। বিষয়টি নজরে আসার পরে তা নিয়ে রাজ্যের সমস্ত স্তরের সরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার সরকারি চিকিৎসকদের নিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে একটি কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানানো হয়েছে, তীব্র জ্বরের ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে মৃদু জ্বর ও সঙ্গে পেট খারাপের উপসর্গ দেখলেই এনএস-১ কিংবা আইজিএম (অ্যালাইজ়া) পরীক্ষার মাধ্যমে দেখে নিতে হবে ওই রোগী ডেঙ্গি আক্রান্ত কিনা। আরও বলা হয়েছে, কোনও রোগী যদি ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে আসেন, তা হলে খোঁজ নিতে হবে, তাঁর জ্বর হয়েছিল কিনা। এর পাশাপাশি, কালো পায়খানা, দুর্বলতা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি, শরীরে র্যাশের মতো উপসর্গ যদি জ্বরের সঙ্গে থাকে, তা হলেও ডেঙ্গির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে।
মেডিসিনের চিকিৎসক জ্যোতির্ময় পাল জানাচ্ছেন, আগে ডেঙ্গির উপসর্গ বলতে তীব্র জ্বর ও গাঁটে বা শরীরে ব্যথা বোঝাত। ১৯৯৫ সাল নাগাদ ডেঙ্গি শক সিনড্রোম, ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার মিলতে শুরু করে। তিনি আরও বলেন, ‘‘২০১২-তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জানায়, ডেঙ্গিতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্লেটলেট কমে যাওয়া, রক্তক্ষরণের পাশাপাশি অন্যান্য উপসর্গও এখন মিলছে। জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বুকে ব্যথা, জন্ডিস, কিডনির সমস্যা দেখা গেলে ডেঙ্গির আশঙ্কার কথা মাথায় রাখতে হবে।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই ডেঙ্গির উপসর্গের মধ্যে পেট খারাপ ও মৃদু রক্তক্ষরণকে রাখা হচ্ছে। যদিও সেই সমস্ত উপসর্গের রোগী যে খুব বেশি সংখ্যায় মিলত, তেমনটা নয়। কিন্তু চলতি বছরে ওই দু’টি তো বটেই, অন্যান্য উপসর্গে আক্রান্তদেরও ডেঙ্গি পজ়িটিভ আসছে। ক্রিটিক্যাল কেয়ার চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা বলেন, ‘‘ডেঙ্গি ভাইরাসের মিউটেশন হচ্ছে। তা ছাড়াও ডেঙ্গির চারটি প্রজাতি রয়েছে। তার একটিতে এক বার আক্রান্ত হওয়ার পরে, আবার অন্য কোনও প্রজাতিতে সংক্রমিত হলে সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেকটা বেশি থাকে।’’