এন আর এস হাসপাতালে প্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের সূচনা করছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আগামী দিনে বিশ্বকে পথ দেখাবে ভারত। আর সেই ভারতকে পথ দেখাবে বাংলা। বৃহস্পতিবার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের সার্ধশতবর্ষ পূর্তির সূচনা অনুষ্ঠানে এসে এ ভাবেই রাজ্যের প্রশংসা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নতুন রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে এটাই ছিল তাঁর প্রথম সরকারি অনুষ্ঠান।
১৮৭৩ সালের ১ ডিসেম্বর পথ চলা শুরু হয়েছিল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের। প্রথমে নাম ছিল ‘শিয়ালদহ মেডিক্যাল স্কুল’। ১৮৮৪ সালে নাম বদলে হয় ‘ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুল’। পরে হয় ‘ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল কলেজ’। ১৯৫০ সালে মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় ওই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করেন স্বনামধন্য চিকিৎসক তথা সেখানকারই প্রাক্তনী নীলরতন সরকারের নামে। এ দিন ১৫০ বছরে পা দিল এনআরএস। অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী জানান, এক বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার হোক বা সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে এশিয়ার প্রথম নলজাতক দুর্গার জন্ম— এই মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাস জড়িয়ে আছে নানা ঘটনার সঙ্গে। তাই এমন একটি প্রতিষ্ঠানে আসতে পেরে তিনি গর্বিত বলেও জানান রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, “বাংলার ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবময়। বাংলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তরুণ প্রজন্মের উপরে। আর সেই প্রজন্মকেই তৈরি করে চলেছে এনআরএসের মতো প্রতিষ্ঠান।” তিনি আরও বলেন, “এই প্রতিষ্ঠান শুধু মেডিক্যাল কলেজই নয়, বরং জাতীয় সম্পত্তি।” তাঁর বক্তৃতায় এ দিন নীলরতন সরকারের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্কের কথাও উঠে আসে।
করোনা-পর্বে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে তাঁদের সকলকে ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’র সঙ্গে তুলনা করেন রাজ্যপাল। তাঁর মুখে বাংলার প্রশংসা শুনে অনুষ্ঠানের শেষে এনআরএসের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “নতুন রাজ্যপাল সংবিধান মেনে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই চলবেন বলে আশা রাখি।” অনুষ্ঠানে কাশীপুর রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী দিব্যানন্দ, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম-সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।