রাজ্যের আমলাদের জন্য শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে সরকারি উদ্যোগে। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত আমলাদের বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করাতে অভিনব উদ্যোগ রাজ্যের। দ্বাদশ শতক থেকে এই শতকের পাঁচের দশক পর্যন্ত বাংলার শিল্পকলা নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে ‘নেতাজি সুভাষ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিউট’-এ। সেটাও আবার শুধুমাত্র রাজ্যে কর্মরত ভিনরাজ্যের আমলাদের জন্য। ‘বাংলার শিল্পকলা: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধুনিকতায় রূপান্তর’ শীর্ষক এই শিল্প প্রদর্শনীতে থাকছে ৮৫টি শিল্পকর্ম। বুধবার থেকেই শুরু হচ্ছে এই প্রদর্শনী। এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন মুখ্যনমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা তথা নেতাজি সুভাষ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট- এর ডিরেক্টর জেনারেল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারমান তথা শিল্পী শুভাপ্রসন্ন।
শিল্প প্রদর্শনী নিয়ে আলাপনের মত, এ রাজ্যের শিক্ষানবিশ অফিসার থেকে সদ্য নিযুক্ত অফিসার, সবাই বাংলার শিল্পকলা সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা তৈরি করতে পারবেন। সংবাদমাধ্যমকে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘চাকরি করতে এলে রাজ্য সম্পর্কে প্রাথমিক ভাবে একটা প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন আমলারা। এ পর্যন্ত আমরা প্রশাসন, বিধি-বিধান সম্পর্কে সাধারণ ভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলাম। মনে করা হয়েছিল, সবাই বাংলার জনজীবন সম্পর্কে স্বচ্ছ ভাবে জানতে পারবেন। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা বুঝেছি, সর্বভারতীয় চাকরি করতে বাংলায় এসে আমলারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন।’’
আলাপন জানান, ভিনরাজ্যের যে আমলারা বাংলায় কর্মরত, তাঁদের এখানকার শিল্প-সংস্কৃতি, ইতিহাস, ভূগোল নিয়ে সম্যক ধারণা থাকে না। একটা সময় দেখা যেত বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি বলতে এঁরা সবাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বোঝেন। কিন্তু সেটাই বা কতজন বোঝেন! এ সব কারণেই এই শিল্প প্রদর্শনীর উদ্যোগ। জানা গিয়েছে, রাজ্যের জনজীবনের প্রতিটি বিষয়ের জন্য একটি পাঠ্যক্রমও তৈরি হয়েছে। সেখানে শিক্ষকের ভূমিকায় শুধু আইএএস অফিসারই নন, বাংলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীরাও থাকবেন। শিল্পী শুভাপ্রসন্নের বলেন, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই এমন একটি প্রদর্শনীর কথা চিন্তা করার জন্য।’’ তিনি জানান, এই প্রদর্শনীতে থাকছে পটচিত্র, কাঁথাশিল্পও। তা ছাড়া থাকছে বাংলার প্রখ্যাত শিল্পীদের ৮৫টি শিল্পকীর্তির ডিজিটাল প্রিন্ট।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, রাজ্যে কাজ করতে হলে বাংলা-সহ আঞ্চলিক ভাষার উপর জোর দিতে হবে আমলাদের। অন্য দিকে, কেন্দ্রের আইএএস ক্যাডার আইন সংশোধনীর প্রতিবাদ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রেক্ষিতে এ হেন উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।