Albinder Dhindsa

Albinder Dhindsa: ছেড়েছেন মোটা অঙ্কের চাকরি, গ্রোফার্স খুলে বছরে ২৩ হাজার কোটির মুনাফা অলবিন্দ্রর

মুদিখানার জিনিসপত্র ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে অলবিন্দ্রর সংস্থা

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৬
Share:
০১ ১৮

চাল-ডাল-নুন-তেল কিনতে পাড়ার মুদিখানার উপরেই ভরসা করেন অনেকে। আজকাল মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার দিয়েও সে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন তাঁরা। কিন্তু বছর কয়েক আগেও এ ভাবে কেনাকাটায় অভ্যস্ত ছিলেন না মধ্যবিত্তেরা। তাঁদের কেনাকাটার ধরন বদল দেওয়ার পিছনে অলবিন্দ্র ঢিঢসার যথেষ্ট হাত রয়েছে।

০২ ১৮

আমজনতার কাছে হয়তো পরিচিত নন অলবিন্দ্র। তবে তাঁর সংস্থার নাম অচেনা নয়। এককালে গ্রোফার্স নামে পরিচিত সেই সংস্থাই ব্লিঙ্কিট হিসাবে নতুন চেহারায় এসেছে। তবে নামবদল করলেও আগের মতোই দ্রুতগতিতে মুদিখানার জিনিসপত্র ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে অলবিন্দ্রর সংস্থা। ২০২০ সালের অর্থবর্ষে যার মুনাফার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা।

Advertisement
০৩ ১৮

ওই অর্থবর্ষে অলবিন্দ্রের নিজের নিট আয় ছিল ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। গ্রোফার্স শুরু করার ন’বছরের মধ্যেই এত টাকা কামিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। কী ভাবে শুরু হল অলবিন্দ্রের যাত্রা?

০৪ ১৮

গ্রোফার্সের মতো স্টার্ট-আপ শুরু করার আগে আমেরিকার দু’টি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন অলবিন্দ্র। তার পর দেশে ফিরে জোম্যাটোতেও উঁচু পদে ছিলেন তিনি। দিল্লি আইআইটি-র স্নাতক হওয়ার পর আমেরিকায় পাড়ি দেন অলবিন্দ্র। এক সময় ট্রান্সপোর্টেশন এবং লজিস্টিক্স নিয়ে পেশাদারি দক্ষতা অর্জন করেন তিনি।

০৫ ১৮

২০০৫ সালে আমেরিকার বহুজাতিক সংস্থা ইউআরএস কর্পোরেশন-এ ট্রান্সপোর্টেশন অ্যানালিস্ট হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন অলবিন্দ্র। দু’বছর পর সংস্থা বদল করে কেমব্রিজ সিস্টেমেটিক্স-এর সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট হন। আমেরিকার ওই দুই বহুজাতিক সংস্থায় মোটা মাইনের চাকরি করলেও তখন থেকেই নিজের সংস্থা খোলার ইচ্ছে পুষে রেখেছিলেন। আচমকাই সে সুযোগ এসে যায়।

০৬ ১৮

আমেরিকায় কাজ করার সময়ই তাঁর ভাবী সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিওও-র সৌরভ কুমারের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল অলবিন্দ্রর। সৌরভ তখন কেমব্রিজ সিস্টেমেটিক্স-এ তাঁর সহকর্মী।

০৭ ১৮

চাকরি নয়, ব্যবসা করতে হবে— হঠাৎই মনে হয়েছিল অলবিন্দ্রর। এক সময় মোটা মাইনের চাকরি ছাড়ার ঝুঁকিও নিয়ে ফেলেন। এ বার আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এমবিএ ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে আসেন অলবিন্দ্র। তখনও অবশ্য নিজের স্টার্ট-আপ খোলার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলেন না।

০৮ ১৮

দেশে ফিরে ইন্টারন্যাশনাল অপারেশনস-এর প্রধান হিসাবে জোম্যাটোতে চাকরি শুরু করেন অলবিন্দ্র। উদ্দেশ্য ছিল, রোজগারের পাশাপাশি হাতেকলমে খাবার ডেলিভারি দেওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করা। ডেলিভারির সময় কী কী বাধার সম্মুখীন হতে হয়, মনোযোগী ছাত্রের মতো সে দিকেও নজর রাখতেন অলবিন্দ্র।

০৯ ১৮

অ্যাপ-নির্ভর খাবার সরবরাহকারী সংস্থা জোম্যাটোয় প্রায় তিন বছর কাজ করেছিলেন অলবিন্দ্র। সে কাজ করতে করতেই নিজের স্টার্ট-আপ সংস্থার খোলার কথাও চিন্তা-ভাবনা করতেন তিনি। সঙ্গে পেয়েছিলেন তাঁর এককালের সহকর্মী সৌরভকে। দেশে ফিরে এলেও বরাবরই সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল অলবিন্দ্রর।

১০ ১৮

যদিও শুরুতে গ্রোফার্স নয়, ওয়াননাম্বার নামে একটি ডেলিভারি সংস্থা খুলেছিলেন অলবিন্দ্র এবং সৌরভ। সেটি ছিল ২০১৩ সাল। গোড়ার দিকে দোকানির থেকে জিনিসপত্র নিয়ে তা পাড়াপড়শিকে পৌঁছে দিত ওয়াননাম্বার।

১১ ১৮

মাঠে নেমে কাজের কী কী অসুবিধা, তা জানতে অলবিন্দ্র এবং সৌরভও ডেলিভারি করেছেন। বস্তুত, চার কিলোমিটারের মধ্যে কমপক্ষে ৫০-৬০টি ডেলিভারি দিয়েছেন তাঁরা। খুঁটিয়ে জেনেছেন দোকানি এবং গ্রাহকের অসুবিধার কথাও। স্টার্ট-আপ সংস্থাটি মুনাফার মুখ দেখলেও বড়সড় লক্ষ্যভেদ করতে চাইছিলেন অলবিন্দ্র।

১২ ১৮

জোম্যাটোতে কাজ করার সময়ই তুখোড় বিশ্লেষক হিসাবে পরিচিত বেড়েছিল অলবিন্দ্রর। ওয়াননাম্বার শুরুর পর খেয়াল করেছিলেন, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অর্ডার দেওয়া হয় মুদিখানার মালপত্র এবং ওষুধ। তবে সে সব অর্ডার ঠিকঠাক দেওয়া হলেও গ্রাহক পরিষেবা নিয়ে এ দেশে বেশ ডামাডোল রয়েছে। সেই ফাঁকই ভরাট করতে চেয়েছিলেন অলবিন্দ্র। সেই ভাবনা থেকেই জন্ম হয়েছিল গ্রোফার্সের। অ্যাপের মাধ্যমে লোকজনের ঘরে ঘরে চটজলদি মুদিখানার জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার সংস্থা।

১৩ ১৮

২০১৩ সালে ওয়াননাম্বারের ভোল পাল্টে গ্রোফার্স শুরু করেন অলবিন্দ্র এবং সৌরভ। হরিয়ানার গুরুগ্রামে হয় সংস্থার সদর দফতর। গ্রোফার্স শুরু মাত্র তিন বছরের মধ্যেই সাফল্য-ব্যর্থতা দুইয়ের মুখ দেখেছিলেন অলবিন্দ্র।

১৪ ১৮

২০১৫ সালে জাপানের সফ্টব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর সঙ্গে ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি সেরে দেশের হাইপার-লোকাল সংস্থাগুলির মধ্যে প্রথমসারিতে বসে পড়ে গ্রোফার্স। তবে ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে লোকসানও দেখেছিলেন। সে সময় মুনাফা ছিল মাত্র ১৪ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। আর লোকসান ২২৫ কোটির। বাধ্য হয়েই সংস্থার ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটার পাশাপাশি দেশের ন’টি শহরে ঝাঁপ ফেলেছিলেন অলবিন্দ্ররা।

১৫ ১৮

ব্যর্থতার থেকেই সাফল্যের পথ খুঁজে বার করেন অলবিন্দ্র। এ বার গ্রোফার্সের মোবাইল অ্যাপ ছাড়লেন বাজারে। গুরুগ্রাম, বেঙ্গালুরু-সহ বেশ কয়েকটি শহরে অর্ডার দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে জিনিসপত্র পেয়ে যেতেন গ্রাহকেরা। দিল্লি, গুরুগ্রাম এবং বেঙ্গালুরুতে একটি ৬০ হাজার বর্গফুটের গুদামের ব্যবস্থাও করে ফেলেন অলবিন্দ্র। তাতে মুদির দোকানের জিনিসপত্র মজুত থাকত। অর্ডার এলে সেখান থেকেই মালপত্র গ্রাহকদের ঘরে পৌঁছে যেত।

১৬ ১৮

অনলাইনে অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি দেওয়ার সংস্থা দেশে কম নয়। রয়েছে বিগ বাস্কেট বা জিওমার্টের মতো বড় খেলোয়াড়েরাও। তবে চটজলদি ডেলিভারির জেরে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে গ্রোফার্স।

১৭ ১৮

সফল হলেও ফের গ্রোফার্সকে নয়া রূপ দিয়েছেন অলবিন্দ্র। গত বছর তা নতুন লোগো এবং নাম নিয়ে বাজারে আসে গ্রোফার্স। এ বার ব্লিঙ্কিট। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি দেশের ৩০টিরও বেশি শহরে শাকসব্জি, মোবাইল, বইপত্র, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে অলবিন্দ্রের সংস্থা।

১৮ ১৮

২০২১ সালে জাপান, আমেরিকার বিনিয়োগকারীরা ৬৩ কোটি ডলার অর্থ ঢেলেছেন ব্লিঙ্কিটে। ভারতীয় মুদ্রায় যার অর্থমূল্য প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement