প্রতীকী ছবি।
এলাকায় কোনও ‘ভীত’ বা ‘আতঙ্কিত’ ভোটার রয়েছেন কি না, তা খুঁজে দেখতে থানাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। তেমন ভোটার কোনও থানা এলাকায় থাকলে তাঁদের নাম লালবাজারে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রতিটি থানা এলাকাতেই ‘ভীত’ বা ‘আতঙ্কিত’ ভোটারদের খুঁজে বার করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের কর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই থানার ওসিদের কাছে এই নির্দেশ পৌঁছেছে। বলা হয়েছে, প্রতি রাতে লালবাজারের ইলেকশন সেলে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়, সেখানেই ওই ভোটারদের নাম-ঠিকানা পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে, তাঁদের যদি কেউ হুমকি দিয়ে থাকে, তবে সেই হুমকিদাতাদের বিশদ তথ্যও পাঠাতে বলা হয়েছে। হুমকিদাতার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন থানা থেকে লালবাজারে পাঠানো আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত রিপোর্টের মধ্যে থাকছে ওই ‘ভীত’ বা ‘আতঙ্কিত’ ভোটারের তালিকা। পুলিশের এক কর্তা জানান, নির্দেশ মোতাবেক সব তথ্য পাঠানো হলেও অধিকাংশ থানাই ‘ভীত বা আতঙ্কিত’ ভোটারের ক্ষেত্রে তাদের এলাকায় কেউ নেই বলে জানাচ্ছে। আবার পুলিশেরই অনেকে বলছেন, শহরে এমন ভোটার খুঁজে বার করা সত্যিই দুঃসাধ্য! কারণ, কাউকে ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটলেও সেই অভিযোগ পুলিশের কাছে পৌঁছচ্ছে না। তবে ভোট যত এগিয়ে আসবে, ততই ওই ‘ভীত বা আতঙ্কিত’ ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের অন্দরেই।
পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশ এলাকায় এ বার চার দফায় ভোট হবে। খাস কলকাতায় না হলেও ৬ এপ্রিল ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের ১৪টি ভোটকেন্দ্র পড়ছে কলকাতা পুলিশের লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার অধীনে। এর বাইরে ১০, ২৬ এবং ২৯ এপ্রিল ভোট রয়েছে লালবাজারের অধীন থানাগুলিতে। কলকাতা পুলিশ এলাকায় যাতে শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে ভোট হয়, তার জন্য পুলিশ কমিশনার বাহিনীকে আগে থেকেই সর্তক করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে পক্ষপাতহীন ভাবে ভোট পরিচালনা করতে বলেছেন তিনি। তার পর থেকেই বিভিন্ন থানা নিজেদের নিজেদের এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ ঠেকাতে তৎপর হয়েছে। কোথাও কোনও গোলমালের খবর পেলেই সেখানে বাহিনী পৌঁছে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন থানা এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। টহল দেওয়ার সময়ে তাঁদের হাতে থাকছে এলাকার দাগি অপরাধীদের তালিকা। ওই তালিকা ধরে ধরে জওয়ানেরা খোঁজ নিচ্ছেন, পলাতক দাগি অপরাধীরা এলাকায় ফিরেছে কি না। যাদের বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে, তাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন তাঁরা।
পুলিশ অফিসারদের মতে, ভোটের আগে এই তৎপরতার মাধ্যমে ‘ভীত’ ভোটারদের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে আগামী দিনে তাঁরা ভোট দিতে ভয় না পান। প্রত্যেক ভোটারের কাছেই এর মাধ্যমে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ।