বিপত্তি: শুক্রবার এসএসকেএমের একতলার ফার্মাসিতে জমে যায় জল। ছবি: সুদীপ ঘোষ
বেহাল নিকাশি! তার জেরে পানি-পথের সঙ্গে শনিবারও লড়াই চালাল এসএসকেএম।
শুক্রবার দুপুরের পরে টানা আড়াই ঘণ্টার ভারী বৃষ্টির জেরে ওই হাসপাতালের গাইনেকোলজি ব্লকের মেটারিনিটি ওয়ার্ড ও বহির্বিভাগ এবং মেন ব্লকের একতলার ফার্মাসি জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। এসএসকেএম সূত্রের খবর, ফার্মাসিতে স্যালাইন, সুগারের ওষুধ যে সব বাক্সে রাখা ছিল, জলের সংস্পর্শে আসায় সেই সব কার্টন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সে সব সরানোর ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। তবে ওষুধের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই এ দিন দাবি করেছেন ফার্মাসির আধিকারিকেরা।
শুক্রবারই মেটারনিটি ওয়ার্ডের মধ্যে হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। শৌচালয়েও জল ঢুকে যায়। ওই অবস্থাতেই শৌচালয় ব্যবহারে বাধ্য হয়েছিলেন মামনি কুন্ডু, মাধবী মণ্ডলেরা। পাম্প চালিয়ে রাতের মধ্যেই সেই জল সরানোর ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। তবে সারা রাতের বৃষ্টির পাশাপাশি এ দিন সকালের ভারী বৃষ্টিতে ফের জল ঢোকে ওয়ার্ডে।
এ দিন দুপুরে স্ত্রীরোগ বিভাগে গিয়ে দেখা গেল, ওয়ার্ডের কিছু অংশে তখনও জল জমে রয়েছে। পাম্প চালিয়ে ওয়ার্ডের বাইরে জমা জল নিকাশি নালায় ফেলার চেষ্টা করছেন হাসপাতালের পূর্ত বিভাগের কর্মীরা। চেষ্টা বলাই ভাল। কারণ, জল যেখানে ফেলা হবে সেই ম্যানহোল কানায় কানায় ভর্তি। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, হরিশ মুখার্জি রোডে ওই জল যাওয়ার তিনটি পিট রয়েছে। সেগুলিরও একই অবস্থা। জরুরি বিভাগের পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে লিফট, ব্লাড ব্যাঙ্কের একতলায় অবস্থিত টিকাকরণ কেন্দ্র, এইচআইভি পরীক্ষা কেন্দ্রেও জল থইথই ছবি। তবে বিকেলের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়।
ভারী বর্ষণের জন্য এমন অবস্থা বলে শুক্রবারই জানিয়েছিলেন এসএসকেএমের সুপার রঘুনাথ মিশ্র। নিকাশি প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী বাবলু সিংহের ব্যাখ্যা, ‘‘মাস দুয়েক আগে হরিশ মুখার্জি রোডে অবস্থিত তিনটি পিটই পরিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে পাম্পিং স্টেশনগুলি জল টানতে পারছে না।’’ এ দিন নিকাশির পরিস্থিতি দেখতে পুরসভার একটি দল যায়। সোমবার সংস্কারের কাজ শুরু করবে তারা।
বেহাল নিকাশি নিয়ে জল-যুদ্ধ চলছে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। শুক্রবার সন্ধ্যায় জল ঢুকেছিল সেখানকার জরুরি বিভাগে। এ দিন সেখানকার ফার্মাসিতে জল ঢুকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাখা কেমিক্যাল নষ্ট হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। অর্থোপেডিক, জেনারেল সার্জারির বহির্বিভাগে জমা জলের মধ্যেই চিকিৎসকেরা রোগী দেখেছেন। তবে ইউরো সার্জারির বহির্বিভাগ অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়েও জল জমে আংশিক সমস্যা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস।