নিজস্ব চিত্র।
কোনও ভাবে কি আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল মল্লিকবাজারের বন্ধ সিনেমা হলে? বুধবার কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দল পোড়া সিনেমা হল ঘুরে যাওয়ার পর থেকে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে নানা মহলে। কারণ ফরেন্সিক আধিকারিকেরা দেখেছেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ওই হলে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। উল্টে হলের নানা জায়গা থেকে তাঁরা পেট্রলের মতো দাহ্য পদার্থ পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের দাবি, আগুনের সম্ভাব্য উৎসস্থলেও দেখা গিয়েছে দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি। তবে ফরেন্সিক পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পরেই স্পষ্ট মতামত দেওয়া সম্ভব বলে দাবি লালবাজারের।
মঙ্গলবার দুপুর দুটো নাগাদ আগুন লাগে মল্লিকবাজারে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পার্ক শো হাউস নামে একটি সিনেমা হলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। অভিযোগ, প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও দমকলকর্মীদের কাজ শুরু করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। কারণ, হলের দরজার চাবি প্রথমে পাওয়াই যায়নি। জানলার কাচ ভেঙে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। তত ক্ষণে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। সিনেমা হলটির পাশেই একটি স্নায়ুরোগ চিকিৎসার হাসপাতাল রয়েছে। আতঙ্ক ছড়ায় সেখানেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক মাসে একাধিক বার ওই হলে আগুন লেগেছে। কিন্তু হলটি বন্ধ থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বার বার আগুন লাগার এমন ঘটনা ইচ্ছাকৃত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এ দিন ঘটনাস্থল ঘুরে ফরেন্সিক আধিকারিকদের অনুমান, হলের ভিতরে তিনটি এমন জায়গা রয়েছে, যা আগুনের উৎসস্থল হতে পারে। তাঁরা জানিয়েছেন, তেতলার প্রজেক্টর রুমে প্রথম পাওয়া গিয়েছে পেট্রলের মতো দাহ্য পদার্থ। একই জিনিস মিলেছে দর্শকাসনের দু’পাশে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বেনিয়াপুকুর থানা। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘খালি চোখে যেটা পেট্রল মনে হচ্ছে, সেটা আসলে কী, তা পরীক্ষায় বোঝা যাবে। তবে আগুন যে ইচ্ছাকৃত ভাবে লাগানো হয়েছে, সেটা প্রায় স্পষ্ট।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ফরেন্সিকের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পরে মামলায় নতুন ধারা যুক্ত করা হতে পারে।