অবশিষ্ট: বিবেকানন্দ উড়ালপুলের এই অংশই ভাঙার কাজ শুরু হতে চলেছে। সোমবার, পোস্তায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হবে পোস্তার বিবেকানন্দ উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজ। লালবাজার সূত্রের খবর, কাল বুধবার কেএমডিএ, কলকাতা পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভার তরফে যৌথ ভাবে ওই উড়ালপুল পরিদর্শন হবে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কবে থেকে উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজ শুরু হবে, তা কমিটির প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পরে ঠিক করা হবে।’’ তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, উড়ালপুলের আশপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক করে ভাঙার কাজ শুরু হতে প্রায় তিন সপ্তাহ লাগতে পারে।
সোমবার দুপুরে পুলিশের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, রাত থেকেই বিবেকানন্দ উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজ শুরু হবে। সেই মতো সতর্ক করে দেওয়া হয় আশপাশের বাসিন্দাদের। পরে ওই নির্দেশিকা নিয়ে সাময়িক বিভ্রান্তি ছড়ায়। শেষে বিকেলে লালবাজারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই নির্দেশিকা বাতিল করা হয়েছে। কাল, বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উড়ালপুল ভাঙার কাজ কবে থেকে শুরু হবে, তা ঠিক করা হবে।
২০১৬ সালের ৩১ মার্চ গণেশ টকিজের কাছে বিবেকানন্দ রোড এবং রবীন্দ্র সরণির সংযোগস্থলে ভেঙে পড়ে বিবেকানন্দ উড়ালপুলের একাংশ। সেই ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৮০ জনেরও বেশি। ওই বিপর্যয়ের পরে দফায় দফায় একাধিক সংস্থাকে দিয়ে উড়ালপুলের সমীক্ষা করানো হয়। সেই সমীক্ষায় ইতিমধ্যেই খড়্গপুর আইআইটি এবং রাইট্স-এর তরফে জানানো হয়েছে, দু’কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ ওই উড়ালপুলের নকশা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ত্রুটি রয়েছে।
উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে কেটে গিয়েছে তিন বছর। এখনও আতঙ্ক পিছু ছাড়েনি স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঘটনার পরপরই পুরো উড়ালপুল ভেঙে ফেলার দাবিতে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। এলাকাবাসীর উদ্যোগে গড়ে ওঠে ‘উড়ালপুল হটাও অভিযান সমিতি’। সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাপি দাস বলেন, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। তবে চাই, শুধু বিপজ্জনক অংশ নয়, ভেঙে ফেলা হোক পুরো উড়ালপুলই।’’ যদিও পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশ ভাঙা হবে।’’
লালবাজার সূত্রের খবর, উড়ালপুল ভাঙার কাজ শুরু হলে কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট, বিবেকানন্দ রোড এবং রবীন্দ্র সরণির একাংশে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ওই এলাকায় যানজট বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। প্রসঙ্গত, বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে কয়েক মাস নীচ দিয়ে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ থাকলেও এখন নিয়মিত বাস-গাড়ি চলাচল করছে। হাওড়া থেকে গিরিশ পার্ক হয়ে উত্তর কলকাতা যাওয়ার পথ কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট। পুলিশ জানিয়েছে, উড়ালপুল ভাঙার কাজ শুরু হলে মহাত্মা গাঁধী রোড, রবীন্দ্র সরণি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির চাপ বেশি থাকবে। যদিও লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কাজ শুরু হলেও যাতে যানজট না হয়, তার যথাযথ ব্যবস্থা করা হবে। রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে। নির্দিষ্ট পথে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।’’