রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার সেতুর বিভিন্ন অংশের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। সেই কারণেই কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে চায় রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি)। ওই সংস্থার তরফে লালবাজারকে সে কথা মৌখিক ভাবে জানানোও হয়েছে।
সূত্রের খবর, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই এইচআরবিসি ওই কাজ করতে চায়। যদিও তার দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। পুলিশের তরফে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এইচআরবিসি-কে বলা হবে কোনও এক রবিবার দিনের বেলায় সেই কাজ করতে। তখন ছ’ঘণ্টা ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। পুলিশ এবং এইচআরবিসি-র আধিকারিকেরা সম্প্রতি সেতু পরিদর্শন করেছেন। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, এইচআরবিসি আগে যান চলাচল বন্ধ করার লিখিত প্রস্তাব দিক। তার পরেই সিদ্ধান্ত হবে কবে এবং কত ক্ষণ সেতু বন্ধ থাকবে।
দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। ৮২৩ মিটার দীর্ঘ সেতুটি ভারতের দীর্ঘতম কেব্ল সেতু। দিনে কয়েক হাজারের বেশি ছোট-বড় গাড়ি যাতায়াত করে সেখান দিয়ে। কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ কিংবা ভিন্ রাজ্যের যোগাযোগের অন্যতম যোগসূত্র এটি। ফলে যানবাহনের অত্যধিক চাপের জন্য সেতুর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছেই। এ জন্য বছর তিনেক আগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করানো হয়েছিল। সেতুর দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের কথা ভেবে সেখানে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
পুলিশের প্রস্তাব মতো রবিবার সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ হলে গাড়ির চাপ একটু কম থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। তবু দিনভর কয়েক হাজারের কম গাড়ি চলে না। ফলে গাড়ির নিয়ন্ত্রণে সব পক্ষের সাহায্য দরকার বলেই মত। পুলিশ সূত্রের খবর, টালা সেতু না থাকায় বিদ্যাসাগর সেতু দিয়েই মূলত পণ্যবাহী ভারী গাড়ি যাতায়াত করছে। এ ছাড়াও কলকাতা বন্দরের সব পণ্যবাহী গাড়ি ওই সেতু দিয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার জন্য সেতু বন্ধ হলে দু’প্রান্তে যানজট হতে পারে। তাই কলকাতা পুলিশ এই কাজের বিষয়ে পোর্ট ট্রাস্ট, এডিজি ট্র্যাফিক এবং রাজ্য পুলিশের কর্তাদের জানানোর জন্য এইচআরবিসি-কে বলেছে। যাতে সব পক্ষের সমন্বয়ে গঙ্গার দু’প্রান্ত থেকে নির্দিষ্ট দিনে এবং সময়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। হাওড়া, ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের সঙ্গেও কথা বলা প্রয়োজন। কারণ, লরি বা পণ্যবাহী গাড়ি কোথায় আটকানো হবে, তা স্থির করতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, হাওড়ামুখী ছোট গাড়ি রবীন্দ্র সেতু দিয়ে পাঠানো হবে। হাওড়া পুলিশও বিদ্যাসাগর সেতুর বদলে ফোরশোর রোড দিয়ে ছোট গাড়ি পাঠাবে বলে খবর।