—ফাইল চিত্র।
পরিস্থিতি ঘোরালো। তাই রাজ্য প্রশাসনের উপরে পুরোপুরি ভরসা না রেখে নিজেদের মতো করেই ডেঙ্গি প্রতিরোধে অভিযান শুরু করেছে সায়েন্স সিটি ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। যেমন ডেঙ্গি মোকাবিলায় কী করণীয়, সে জন্য পতঙ্গ বিশেষজ্ঞদের থেকে বিশেষ পরামর্শ নিতে চলেছেন সায়েন্স সিটি কর্তৃপক্ষ। আবার এই রোগ মোকাবিলায় বিশেষ নির্দেশিকা
জারি করেছেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ। একটাই লক্ষ্য, নিজেদের চত্বরে যতটা সম্ভব ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী এডিসের আস্তানা তৈরি হতে না-দেওয়া। কিন্তু তার পরেও সামগ্রিক ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা।
সায়েন্স সিটি সূত্রের খবর, চত্বর নিয়মিত সাফাইয়ের পাশাপাশি জলাধারগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপরেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সায়েন্স সিটি চত্বরে ছোট-বড় মিলিয়ে তিনটি জলাধার রয়েছে। এমনিতে পুরো সায়েন্স সিটি ৪৪.৬ একর জায়গা জুড়ে আছে। ফলে
চার দিক সাফ-সুতরো রাখা একটা এলাহি ব্যাপার। বিশেষত যেখানে প্রতিদিনই দর্শকদের ভিড় হয়। কিন্তু এলাকা যাতে পরিষ্কার থাকে, তাই ডেঙ্গি পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিশেষ দল নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী এডিস যেহেতু ছোট পাত্রে জমা পরিষ্কার জলে বা বাঁশের উপরে গোলাকৃতি ছোট খোপের জলেও ডিম পাড়তে অভ্যস্ত, তাই সেই সমস্ত আঁতুড়ঘর চিহ্নিত করতে যে ‘এক্সপার্ট-আই’ বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দরকার, তা বুঝতে পেরেছেন কর্তৃপক্ষ। সায়েন্স সিটির অধিকর্তা শুভব্রত চৌধুরী বলেন, ‘‘ডেঙ্গি পরিস্থিতি এখন যে জায়গায় গিয়েছে, তাতে আরও সক্রিয় হতে চাইছি আমরা। পতঙ্গবিদদের একটি বিশেষ দলের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই মতো ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’’
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ আবার ডেঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছেন। ভিক্টোরিয়া ৫৭ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। ভিতরে রয়েছে ছ’টি জলাশয় ও দু’টি ফোয়ারা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বাড়তি সতর্কতার বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। এমনিতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সারা দেশের মধ্যে সব চেয়ে ‘পরিষ্কার মনুমেন্ট’-এর মর্যাদা পেয়েছে। ফলে সারা
বছরই যাতে মেমোরিয়াল চত্বর পরিষ্কার থাকে, সে কারণে বিশেষ দল নিয়োগ করেছেন কর্তৃপক্ষ। তা
সত্ত্বেও চত্বরের কোথাও ছোট পাত্রে যাতে জল বা জঞ্জাল জমে না-থাকে, তা দেখার উপরে বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কিউরেটর-সেক্রেটারি জয়ন্ত সেনগুপ্ত জানান, ভিক্টোরিয়ায় দু’টি ক্যান্টিন রয়েছে। একটি
নিজস্ব, অন্যটি ভিক্টোরিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ বাহিনীর। দু’টি ক্যান্টিনে ব্যবহৃত পাত্রগুলিতে যাতে কোনও ভাবেই জল না জমতে পারে, সে জন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জয়ন্তবাবুর কথায়, ‘‘এ ছাড়া কলকাতা পুরসভার দল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পরিদর্শন করে। সেই পরিদর্শনেও এখনও পর্যন্ত কিছু পাওয়া যায়নি। তবু আমরা
সতর্ক রয়েছি।’’