তছনছ: ভাঙচুরের পরে। শনিবার, বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড হেয়ার ক্যাম্পাসে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম, অফিস লন্ডভন্ড। ভাঙচুরের ছাপ সর্বত্র। ছাড় পায়নি কম্পিউটারগুলিও। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারের তারগুলিও ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাণ্ডব চালানোর আগে সিসি ক্যামেরার তারও টেনে বার করে এনে কেটে অকেজো করে দেওয়া হয়েছিল। শনিবার সকালে এমনই ছবি ধরা পড়ল বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড হেয়ার ক্যাম্পাসে। পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বালিগঞ্জের গড়চার ২১ নম্বর প্রমথেশ বড়ুয়া স্ট্রিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তারক্ষীদের নজরে আসে ভাঙচুরের বিষয়টি। তাঁরা ভিতরে ঢুকে দেখেন, ক্লাসরুম থেকে শুরু করে সর্বত্র কেউ বা কারা তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর করে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। খবর দেওয়া হয় বালিগঞ্জ থানায়।
কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে, প্রায় পনেরো-কুড়ি লক্ষ টাকার জিনিসপত্র ভেঙে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারের মূল সার্ভার থেকে শুরু করে এসি, কম্পিউটার এমনকি শৌচাগারের দরজা এবং কলও।
তদন্ত শুরু করে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানতে পেরেছে, আগামী ১ অক্টোবর বিএড পরীক্ষা শুরু হবে। করোনা আবহে পরীক্ষাটি অনলাইনে হওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি কেউ বা কারা রটিয়ে দিয়েছিল অনলাইনে নয়, উপস্থিত থেকে পরীক্ষা দিতে হবে। যদিও কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পরে সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয় কোনও ভাবেই উপস্থিত থেকে পরীক্ষা নেওয়া এই পরিস্থিতিতে হচ্ছে না। আর তার পরেই শনিবার সকালে নজরে আসে এই ভাঙচুরের ছবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা বানচাল করার জন্যই এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে দুষ্কৃতীরা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশাসন ও সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পরীক্ষা কোনও মতেই বন্ধ হবে না।’’
প্রশ্ন উঠেছে কে বা কারা কবে ওই ভাঙচুর করেছে? আর নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়েই বা কারা ভিতরে ঢুকল! তা হলে কি ভিতরের কেউ ওই ঘটনা ঘটিয়েছে? অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।