ফাইল চিত্র।
কালীপুজোর দিন বিনা নোটিসে মঙ্গলাহাট বন্ধ করার নির্দেশ ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়াল ব্যবসায়ীদের মধ্যে। যার জেরে হাটে এলেন না তাঁদের অনেকেই। ফলে আংশিক খোলা থাকল হাট। আজ, রবিবার, অর্থাৎ দীপাবলির দিন মঙ্গলাহাট খোলা থাকবে কি না, তা নিয়েও বিভ্রান্তি থাকায় হাট ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করছে হাটের ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলি। ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, কালীপুজো ও দীপাবলি, এই দু’দিন পুলিশ মঙ্গলাহাটে কোনও নিরাপত্তা দিতে পারবে না। তাই তাঁরা হাটে বসবেন কি না, তা তাঁদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তার দাবি, এমন কোনও নোটিস আদৌ জারি করা হয়নি। হাট বন্ধ রাখার কথাও বলা হয়নি।
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গত সেপ্টেম্বর থেকে মঙ্গলাহাট বসছে শনিবার বিকেল ৪টে থেকে রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত। হাটের ভবন ও ফুটপাত মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার ব্যবসায়ী যুক্ত রয়েছেন মঙ্গলাহাটে। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে তাঁরা সেখানে আসেন।
মঙ্গলাহাট সমন্বয় কমিটির সদস্য কানাই পোদ্দার জানান, গত শুক্রবার পুলিশের তরফে তাঁদের জানানো হয়, কালীপুজোর দিন, শনিবার ও তার পরের দিন, রবিবার হাট বন্ধ রাখতে হবে। কারণ, ওই দু’দিন পুলিশ মঙ্গলাহাটে কোনও নিরাপত্তা দিতে পারবে না। যদিও ‘পশ্চিমবঙ্গ বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতি’র তরফে কামাখ্যা সাহা ও পরিমল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এমন কোনও মৌখিক বা লিখিত নির্দেশ আমরা পাইনি। তা ছাড়া, এই ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত প্রতিটি সংগঠনকে ডেকে বৈঠক করে জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে তার কিছুই হয়নি।’’
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, মঙ্গলাহাট আদৌ বন্ধ থাকবে কি না, তা নিয়েই এখন বিভ্রান্ত দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, ওই হাটে অসম, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশের মতো ভিন্ রাজ্য থেকেও ব্যবসায়ীরা আসেন। হঠাৎ করে হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাঁরা তো বিরাট লোকসানের মুখে পড়বেন! এই বিভ্রান্তির জেরেই শনিবার হাটে অধিকাংশ ব্যবসায়ী আসেননি। তাই হাটও পুরোপুরি বসেনি।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘কালীপুজো ও দীপাবলির দিন হাট বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রশাসনিক কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। হাট বন্ধ রাখতেও বলা হয়নি। তবে জানানো হয়েছিল, হাট যে হেতু কালীপুজোর দিন বিকেল থেকে বসবে, তাই পুলিশের পক্ষে কোনও নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ পুলিশ কালীপুজোর ডিউটিতে ব্যস্ত থাকবে। এই বক্তব্য ঘিরেই হয়তো বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।’’
উল্লেখ্য, লকডাউনের কারণে গত ২২ মার্চ থেকেই বন্ধ ছিল মঙ্গলাহাট। এর পরে প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকে ঠিক হয়, সেপ্টেম্বর থেকেই হাট চালু হবে। সেই মতো সোম ও মঙ্গলবারের পরিবর্তে শনি ও রবিবার, দু’দিন হাট চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে হাট ফের চালু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফেরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কিন্তু তার মধ্যেই ফের কালীপুজোর দিন হাট বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়লেন ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই।