উচ্ছেদের ‘চেষ্টা’ ঘিরে বাজারে তুলকালাম

প্রোমোটারের লোকজন বাজার কমিটির সম্পাদক মনোজ পারেসরের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পাল্টা সেই বাহিনীর উপরে চড়াও হন ব্যবসায়ীরাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০২:৪০
Share:

গোলমাল: জোড়াবাগানের নতুনবাজার থেকে ব্যবসায়ীদের তুলে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। (ইনসেটে) চেয়ারে লেগে রক্ত। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

ব্যবসায়ীদের জোর করে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠল জোড়াবাগানের নতুন বাজারে। কারণ, সেখানে শপিং মল হবে! এ নিয়ে প্রোমোটার এবং ব্যবসায়ীদের গণ্ডগোলে শুক্রবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল রবীন্দ্র সরণির নতুন বাজার এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। শনিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে জোড়াবাগান থানা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৭০ কাঠা জমির একাংশে রয়েছে নতুন বাজার। সেখানে দোকান রয়েছে প্রায় ৯০০টি। রাজা রাজেন্দ্র মল্লিকের মালিকানাধীন ওই জমি বর্তমানে একটি ট্রাস্টির অধীনে রয়েছে। ওই ট্রাস্টির তরফেই জমিটি একটি প্রোমোটিং সংস্থাকে ২৯ বছরের জন্য লিজ়ে দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, লিজ়ে পাওয়া জমিতে একটি শপিং মল তৈরি করতে চাইছেন বিনয় দুবে নামে ওই প্রোমোটার। এ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই দু’পক্ষের ঝামেলা চলছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই ঝামেলাই চরমে ওঠে। প্রোমোটারের লোকজন বাজার কমিটির সম্পাদক মনোজ পারেসরের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পাল্টা সেই বাহিনীর উপরে চড়াও হন ব্যবসায়ীরাও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় জোড়াবাগান ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার থানার বিশাল বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয় বলে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি। সেই সময়েই চার জনকে আটক করে পুলিশ। পরে এ দিন দুপুরে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। চেয়ারের উপরে চাপ চাপ রক্ত লেগে। মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে ঘুরছেন বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী। বিশ্বনাথ সোনকার নামে এক ব্যবসায়ী পুলিশের উপরেই দোষ চাপিয়ে বললেন, ‘‘প্রোমোটারের লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ আমাদের ধরে মেরেছে। অনেকের মাথা ফেটে গিয়েছে। মহিলাদেরও ছাড়েনি।’’ মনোজ নামে আক্রান্ত আর এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ‘‘মারধরের পরে পুলিশ বাজারে আমাদের লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙে দিয়েছে। সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্কও খুলে নিয়ে গিয়েছে।’’

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে জোড়াবাগান থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বাজারের ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ঝামেলা করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আমরা ছ’জনকে গ্রেফতার করেছি।’’ গত রাতের ঘটনায় তাঁর ভূমিকা অস্বীকার করেছেন প্রোমোটার বিনয়ও। তাঁর দাবি, ‘‘কার সঙ্গে কার ঝামেলা হয়েছে, বলতে পারব না। আমি উত্তরপ্রদেশে রয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement