চলছে বিক্ষোভ। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র
ভাঙড়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাব-স্টেশন প্রকল্প বন্ধের দাবিতে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। বুধবার সকাল ৯টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লাউহাটি-হাড়োয়া রোড অবরোধ হয়। পাওয়ার গ্রিডের অফিসের সামনেও চলে বিক্ষোভ। দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে। মোতায়েন করা হয় পুলিশ। এক সময়ে অবরোধ তুলতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিও হয়। পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসকের প্রতিনিধি হয়ে অতিরিক্ত জেলা শাসক পিনাকী সেনগুপ্ত কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে অবরোধ ওঠে।
গত কয়েক দিন ধরেই ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের প্রকল্পটি নিয়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। ভাঙড়ের বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা-সহ তৃণমূলের অন্য নেতারাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু বিশেষ ফল মেলেনি। এর আগে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও ভাঙড়ে গিয়ে বৈঠক করেছেন। কিন্তু গ্রামবাসীরা কোনও আশ্বাসেই শান্ত হননি। তাঁদের দাবি, সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য লোহার খুঁটি পুঁতে যে হাইটেনশন লাইন টানার কাজ বন্ধ করতে হবে। কারণ বহু গ্রামের জমির ফসল, পুকুর-সহ পরিবেশ নষ্ট হবে।
এ দিন বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষ তাঁদের কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে। কোনও সমস্যা থাকলে সমাধানের উপায় বার করতে হবে।’’ তিনি জানান, বিক্ষোভকারী সংগঠনগুলিকে আলোচনায় ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা প্রথমে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইছে। তার পরেও প্রয়োজন হলে বৈঠকে বসবেন তিনি।
জমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অলীক চক্রবর্তী এ দিন জানান, সাব-স্টেশন তৈরির নামে গ্রামের মানুষের জমি জোর করে নেওয়া হয়েছে। এলাকার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই গ্রামবাসীদের নিয়ে এই আন্দোলন। একই দাবি করেছে রাজারহাট জমি রক্ষা কমিটির অন্যতম নেতা শেখ নিজামউদ্দিন।
এ দিন অতিরিক্ত জেলা শাসকের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও জমি রক্ষা কমিটির প্রতিনিধিরা বারুইপুর মহকুমা শাসকের দফতরে আলোচনায় বসবেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা যেহেতু গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে ব্যস্ত, তাই তা মেটার পরে জেলা শাসকের সঙ্গে বৈঠক হবে। তত দিনে সাব-স্টেশনের লাইন টানার কাজ বন্ধ থাকবে।