ফাইল চিত্র।
নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করা নিয়ে অবিলম্বে স্বাস্থ্য ভবনের তৎপর হওয়া উচিত। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার প্রেক্ষিতে এমনই মত চিকিৎসক সংগঠনগুলির।
প্রসবযন্ত্রণায় কাতর হাওড়ার এক প্রসূতিকে শনিবার ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এনআরএসের স্ত্রী-রোগ বিভাগের চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই প্রসূতি রাজ্যের করোনা মানচিত্রে ‘হাই-রিস্ক জ়োন’ হাওড়ার বাসিন্দা হওয়ায় তাঁকে প্রথমে ভর্তি নিতে চাওয়া হয়নি। প্রসূতির অভিযোগ, তাঁকে ভয় দেখানো হয় যে, তাঁর ও সদ্যোজাতের করোনা হলে চিকিৎসকেরা দায়ী থাকবেন না। এই পরিস্থিতিতে তরুণী বাড়ি ফিরে শৌচাগারেই প্রসব করেন। সেখানেই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয় বলে দাবি। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে রবিবার হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ দিন তরুণী জানান, সুস্থ হলে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন তিনি।
চিকিৎসক সংগঠনগুলির বক্তব্য, করোনার আতঙ্কে ক্যানসার, ডায়ালিসিস, সিওপিডি-র রোগীদেরও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সম্পাদক মানস গুমটা জানান, নন-কোভিড রোগীদের হয়রানির মাত্রা এমনই যে দু’জন ক্যানসার রোগীকে তিনি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে কেমোথেরাপির জন্য ভর্তি করিয়েছেন। তার আগে একাধিক ক্যানসার হাসপাতাল ওই দুই রোগীকে ফিরিয়ে দেয়। তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে চললে নন-কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাবে। নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করতে নির্দেশিকা জারি করা প্রয়োজন।’’ সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সম্পাদক সজল বিশ্বাসের আবার দাবি, কোভিড নিয়ে যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে সে সবই খাতায়কলমে রয়ে গিয়েছে। তা বাস্তবায়িত করার পরিকাঠামো নেই। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের সম্পাদক কৌশিক চাকীর বক্তব্য, চিকিৎসকদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধির দায়িত্ব স্বাস্থ্য দফতরের। তাতে ঘাটতি রয়েছে বলেই এমন সমস্যা হচ্ছে।
রাজ্যের করোনা-বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের সদর্থক ভাবে পরিস্থিতি বিচার করতে হবে। সতর্ক থাকব, কিন্তু দায়িত্ব এড়াতে সবার মধ্যে কোভিড খুঁজলে চলবে না।’’