নরম ও কড়া পাকের মাঝামাঝি গোলাকার সুশ্রী ২৫০ গ্রামের সন্দেশটি দানাপাকে তৈরি। ফাইল ছবি
সশরীরে নেই, তবু দিকে দিকে মালুম হচ্ছে তাঁদের উপস্থিতি। উৎসবের বোধনের শহরে মণ্ডপে মণ্ডপে এখন ইউনেস্কোকে ধন্যবাদের হিড়িক। সেই আহ্লাদে এ বার বাঙালি ময়রাও শামিল হলেন। দুর্গাপুজোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় উঠে আসার গরিমা এ বার সন্দেশের ছাঁচেও স্পষ্ট।
নতুনবাজারের ছাঁচ শিল্পীর কাছে ইউনেস্কোকে নিবেদিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান মঞ্চের ছবিটাই পাঠিয়েছিলেন ভবানীপুরের বলরামের কর্ণধার সুদীপ মল্লিক। ছাঁচে পুরোটা হুবহু ফুটিয়ে তোলা মুশকিল। কিন্তু মোবাইলের ছবি ছাপিয়ে তা দেখে দুগ্গা ঠাকুরের ত্রিনয়ন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে লেখা, ‘আমরা গর্বিত, দেশ গর্বিত, বিশ্ব গর্বিত’, ‘ধন্যবাদ ইউনেস্কো’। ইংরেজিতে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ও লেখা হয়েছে। নরম ও কড়া পাকের মাঝামাঝি গোলাকার সুশ্রী ২৫০ গ্রামের সন্দেশটি দানাপাকে তৈরি। মানে মুখে দিলে সুস্বাদু দানা-দানা ভাবটি জিভে মালুম হবে। সুদীপ বলছেন, “ইতিমধ্যে শহরের কয়েকটি পুজো কমিটি বিশিষ্ট জনের কাছে সৌজন্য উপহার হিসাবে এ মিষ্টি পছন্দ করেছেন।”
লর্ড ক্যানিংয়ের কলকাতায় আগমন উপলক্ষে ‘লেডিকেনি’, ভিক্টোরিয়ার রানি হওয়া উপলক্ষে ‘করোনেশন’ সন্দেশের নমুনা রয়েছে বাংলার স্বাদ-ভুবনের ইতিহাসে। ওয়াজিদ আলি শাহের নামে নবাবখাস, মতিলাল নেহরুর নামে ভীম নাগের পেস্তা দেওয়া নেহরু সন্দেশ, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নামে আশুভোগ— এ সবও ইতিহাসের অঙ্গ। ময়রারাও অনেক সন্দেশ ভুলে গিয়েছেন। আবার তেরঙা জয়হিন্দ সন্দেশ দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় থেকে এখনও চলছে। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পাওয়ার পরে ‘নোবেল সন্দেশ’ও গড়ে ফেলেছিল ফেলু মোদক। এ বার বলরামের নিবেদন ইউনেস্কো সন্দেশ। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক পার্থ ঘোষের সন্দেশটা পছন্দ হয়েছে। বলছেন, “পুজোর পরে বিজয়ায় ইউনেস্কো-স্বীকৃতির ছায়া থাকবে। তখনও ইউনেস্কো সন্দেশের কাটতি ভাল থাকার সম্ভাবনা।”