—প্রতীকী চিত্র।
বাবার সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসা দেখাশোনা করত দুই ছেলে। অভিযোগ, বাবার মৃত্যুর পরে তাঁর সই নকল করে জাল দলিল বানায় দুই ভাই। সেই ভাবেই মা ও অন্য ভাইবোনদের বঞ্চিত করে ব্যবসা নিজেদের নামে দেখায় তারা। সেই ব্যবসা দেখিয়ে বাজার থেকে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা তোলে দুই ছেলে। এই প্রতারণার অভিযোগে দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃতদের নাম মহম্মদ রাকিব এবং মহম্মদ আরিফ। রাকিবের বাড়ি টেম্পল স্ট্রিটে। আরিফ লিন্টন স্ট্রিটের বাসিন্দা। শুক্রবার বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বৌবাজার থানা এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ রফিকের ওয়াটগঞ্জ, খিদিরপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় কাপড়ের ব্যবসা ছিল। দুই ছেলে রাকিব এবং আরিফকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসা চালাতেন তিনি। ২০০৬ সালে মারা যান রফিক। অভিযোগ, এর পরেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় রাকিব এবং আরিফ। রফিকের স্ত্রী আমনা খাতুন, তাঁদের আরও চার ছেলে এবং এক মেয়ে বর্তমান। অভিযোগ, লাইসেন্স তৈরি-সহ ব্যবসার বিভিন্ন কাজে সুবিধার নাম করে রাকিব এবং আরিফ জাল নথি বানিয়ে তাতে মা এবং বাকি ভাইবোনকে দিয়ে সই করিয়ে নেয়। তাঁদের দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয় সাদা কাগজেও। পরে রফিকের সই নকল করে ব্যবসার জাল দলিল বানিয়ে মালিকানা নিজেদের নামে দেখিয়ে বাজার থেকে ধাপে ধাপে ৭৫ কোটি টাকা তোলে রাকিব ও আরিফ।
এই প্রতারণার কথা জানতে পেরে গত বছর বৌবাজার থানায় দুই ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন রফিকের স্ত্রী আমনা খাতুন। পরে এই মামলার তদন্তভার নেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তদন্তে নেমে রাকিব এবং আরিফকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে বেশ কিছু জাল নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। আমনা খাতুনের আইনজীবী সুদীপকুমার দত্ত জানান, রাকিব এবং আরিফের মা ও অন্য ভাইবোনেরা খুব একটা পড়াশোনা জানেন না। বিশ্বাস করে তাঁরা ওই জাল নথিতে সই করেন। সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়ে তাতে লেখা হয়েছিল, ব্যবসার মালিকানা রাকিব এবং আরিফের নামে করে দিতে বাড়ির বাকি সদস্যদের কোনও আপত্তি নেই। বাজার থেকে টাকা তোলার সময়ে সেই সব নথিপত্র দেখানো হয়েছে। ব্যাঙ্কশাল আদালত এ দিন ধৃতদের ২৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে।