হাওড়া জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র গড়চুমুক। তবে, এখানকার চিড়িয়াখানাটি এখনও খোলা হয়নি। ফাইল ছবি।
নিউ টাউনের ইকো পার্কের পাশে হরিণালয়ে এবং হাওড়ার গড়চুমুকে গড়ে উঠেছে চিড়িয়াখানা। এই দু’টির উদ্বোধন এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। বন দফতর সূত্রের খবর, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই হরিণালয় এবং গড়চুমুকের উদ্বোধনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আধিকারিকদের আশা, শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত পাবেন তাঁরা।
২০১৬ সালে ইকো পার্ক লাগোয়া ৬ নম্বর গেটের কাছে তৈরি হয়েছিল হরিণালয়। এত দিন সেখানে হরিণ রাখা হত। এ বার সেটিকেই একটি ছোট চিড়িয়াখানার রূপ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বন দফতর সূত্রের খবর, হরিণালয়ে ইতিমধ্যেই নিয়ে আসা হয়েছে জিরাফ, জ়েব্রা এবং জলহস্তি। থাকছে অ্যামাজ়ন অববাহিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ-সহ বিভিন্ন অঞ্চলের বিদেশি পাখি। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের পাখিও দেখা যাবে। থাকছে জলের পাখিও। হরিণালয়ে বর্তমানে তিন ধরনের হরিণ রয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আরও চার ধরনের হরিণ আনা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তা পাওয়া গেলে বিভিন্ন চিড়িয়াখানা থেকে হরিণগুলিকে নিয়ে আসা হবে।’’ নিয়ে আসা হয়েছে লবণাক্ত জলের কুমির। যেগুলি সুন্দরবন ও আন্দামানের দিকে পাওয়া যায়। মিষ্টি জলের কুমিরও রয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, আগামী দিনে হরিণালয়ে বাঘ ও সিংহও আনা হতে পারে।
জানা গিয়েছে, হরিণালয়ে থাকা পশু-পাখিদের খাবার উৎপাদনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে এই চিড়িয়াখানায়। তার জন্য লাগানো হয়েছে প্রচুর ফল ও আনাজেরগাছ। পাখিরা বিভিন্ন ধরনের পোকা খায়। তাই ওই চিড়িয়াখানায় সেই সব পোকার চাষও হচ্ছে। সাড়ে ১২ একর জমির উপরে এই চিড়িয়াখানাটি তৈরি হয়েছে ‘ক্লিন জ়ু, গ্রিন জ়ু’প্রকল্প অনুযায়ী।
কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন স্কুল ও ক্লাবের উদ্যোগে এই হরিণালয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে আসা হয় শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, গত মাসে প্রায় সাড়ে ছ’শো পড়ুয়া ঘুরে গিয়েছে এই চিড়িয়াখানায়। এমন শিক্ষামূলক ভ্রমণের ফলে তারা বিভিন্ন পশুপাখি, গাছপালার সঙ্গে পরিচিত হয়। প্লাস্টিক ব্যবহারের অপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করা হয় পড়ুয়াদের। কী ভাবে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, শেখানো হয় তা-ও।
হরিণালয়ের মতো গড়চুমুকের ডিয়ার পার্কটিকেও চিড়িয়াখানায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, ২৪-২৫ একর জমির উপরে নির্মিত ওই চিড়িয়াখানাটিতে বর্তমানে তিন ধরনের হরিণরয়েছে। আছে ঘড়িয়াল-সহ তিন ধরনের কুমির। ভারতীয় ও বিভিন্ন বিদেশি পাখি রয়েছে। গড়চুমুকে রয়েছে এমু পাখিও। আছে পাইথন, সজারু ও কচ্ছপ।