—প্রতীকী চিত্র।
রেললাইনের ধারেই তাঁদের বসবাস। সন্ধ্যা হলেই লাইনের ধার ঘেঁষে আড্ডা বসে বস্তির বাসিন্দাদের। রোজ রাতে দুই ভাইয়ের মারপিট গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল বস্তিবাসীদের। বুধবার রাতেও তেমনটাই হচ্ছিল। মারপিট করতে গিয়েই ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, সুরেশ বাসফোর (২৫) এবং লালন বাসফোর (৩৪) নামে ওই দুই যুবক রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ক্যান্টনমেন্টের রবীন্দ্রনগর ২ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় ডাউন ট্রেনের ধাক্কায় জখম হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুরেশের। আর জি কর হাসপাতালে মৃত্যু হয় লালনের। স্থানীয়দের দাবি, মারপিটের সময়ে দুই ভাইকে তাঁরা সাবধান করেছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ নম্বর রেলগেটের পাশেই বাড়ি সুরেশদের। স্থানীয়েরা জানান, দুই ভাই বিভিন্ন কাজ করতেন। বেশির ভাগ দিনই রেল লাইনের ধারে তাঁরা অনেক রাত পর্যন্ত বসে থাকতেন। প্রায় দিনই দু’জনের মধ্যে মারামারি হত।
স্থানীয় রূপা বিশ্বাস জানান, বুধবার রাতেও তাঁরা লাইনের ধারে বসেছিলেন। কিছুটা দূরে লালন আগে থেকেই বসে ছিলেন। ন’টা নাগাদ সেখানে আসেন সুরেশ। আচমকা দু’জনের বচসা শুরু হয়। পরে তা গড়ায় মারপিটে। রূপা বলেন, ‘‘প্রতিদিনের ঘটনা ভেবে প্রথমে আমরা আমল দিইনি। পরে দেখি ওঁরা মারপিট করতে করতে লাইনের একেবারে ধারে চলে যান। আমরা বারবার বারণ করলেও শোনেননি।’’
বুলা সাহা নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘ওঁরা ডাউন লাইনে চলে যান। সেই সময়ে আপ লাইনেও ট্রেন আসছিল।’’ তিনি জানান, এক ভাই হাতে একটি রড নিয়ে অন্য জনকে পেটানোর চেষ্টা করছিলেন। আচমকা তাঁর হাতের রডটি ট্রেনের কাউ ক্যাচারে আটকে যায়। তখনই ট্রেন এসে পড়ে। হুড়মুড়িয়ে দু’জনে ইঞ্জিনের সামনে পড়ে ছিটকে যান।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, ডাউন হাসনাবাদ ট্রেনের গার্ড রেলের কন্ট্রোল রুমে দুর্ঘটনার খবর দেন। জখম অবস্থায় তাঁদের আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়। লালনের শ্যালক রাজেশ বাসফোরের অবশ্য দাবি, দু’জনের মধ্যে গোলমাল হয়নি। কোনও কারণে তাঁরা ট্রেনের শব্দ শুনতে পাননি। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মৃতদের পরিবারের তরফে অবশ্য রেল পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।