প্রতীকী চিত্র।
রেস্তরাঁয় খেতে আসা লোকজনই ছিল লক্ষ্য। সেখানকার রেস্তরাঁর ওয়েটারদের কয়েক জনকে আগেই টাকা দিয়ে হাত করে রাখত দুই প্রতারক যুবক। ওই ওয়েটারদের কাজ ছিল, কার্ডের মাধ্যমে কেউ বিল মেটাতে গেলে ছোট্ট ‘স্কিমিং’ যন্ত্রে তার নকল করে নেওয়া। এর পরে কোনও ভাবে ওই কার্ডের পিন জেনে নিয়ে সেই তথ্য প্রতারকদের জানিয়ে দেওয়া। পরে সেই নকল কার্ড ও পিনের মাধ্যমে অন্য কোনও শহর থেকে টাকা তুলে নিত প্রতারকেরা।
বৃহস্পতিবার রাতে দার্জিলিং মেল ধরতে যাওয়ার সময়ে শিয়ালদহ স্টেশনে ধৃত মুদাসর খান এবং ইরফানউদ্দিনকে গ্রেফতার করে এমনই তথ্য জেনেছেন কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক প্রতারণা বিভাগের গোয়েন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা আদতে বিহারের গয়া জেলার বাসিন্দা হলেও তিলজলা ও
যাদবপুর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। তাদের থেকে স্কিমিং যন্ত্র, ল্যাপটপ এবং বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৩৮টি ক্লোন করা কার্ড উদ্ধার হয়েছে। সব ক’টি কার্ডের পিছনে তার পিন লেখা রয়েছে। ২৫০ থেকে ৩০০ জনের কার্ড সংক্রান্ত তথ্যও মিলেছে ল্যাপটপ থেকে।
তদন্তকারী এক অফিসার জানিয়েছেন, রেস্তরাঁয় খেতে গিয়ে অনেকেই কার্ডের মাধ্যমে টাকা দেন। সেই সুযোগই কাজে লাগাত ওই ওয়েটারেরা। পরে কার্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রতারকদের জানিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা পেত তারা।
গত কয়েক মাসে এমন চারটি অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তেরা ধরা পড়ে। জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, সাত-আট মাসে মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও কলকাতার মতো কয়েকটি শহরে এ ভাবে প্রতারণা করে সাত-আট লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। তবে কোনও কার্ডের তথ্য সংগ্রহের পরে অন্য শহরে গিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলত তারা। এ দিনও নকল করা কার্ডের মাধ্যমে টাকা তুলতেই ট্রেনে শিলং যাচ্ছিল দু’জন। এই চক্রে আরও কেউ জড়িত কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার দু’জনকে আদালতে তোলা হলে আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।