প্রশ্নে এই ভ্যাট। নিজস্ব চিত্র
২১৪, রাজা রামমোহন রায় রোড। হরিদেবপুর থানা এলাকার মুচিপাড়ায় প্রায় ৭২ কাঠা পাঁচিল ঘেরা জমি মাস কয়েক আগেই উঠেছিল খবরের শিরোনামে। এখান থেকেই উদ্ধার হয়েছিল বেশ কিছু প্যাকেট। যা প্রথমে মানব ভ্রূণ ভাবা হয়। পরে কলকাতা পুলিশ জানায় সেগুলি ‘ড্রাই আইস’। সেই ঘটনার রেশ মিটতেই সামনে আসে ওই জমির গেটের সামনে রাস্তায় থাকা একটি খোলা ভ্যাট। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী সেটি সরানোর জন্য পুরসভাকে আবেদন জানিয়ে আসছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খোলা ভ্যাটটি আগে ওই পাঁচিল ঘেরা জমিটিতেই ছিল। বছর কয়েক ধরে রাস্তার একধারে ভ্যাটটির স্থানান্তর হয়েছে। এর জেরে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। গ্রীষ্ম এবং বর্ষায় ওই ভ্যাট থেকে দুর্গন্ধ এত ছড়ায় যে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা।
এমনকি, জঞ্জাল বোঝাই ওই ভ্যাটটি নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ার অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা। এক দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ভ্যাট থেকে উপচে পড়ছে জঞ্জাল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘নিয়মিত ভ্যাট পরিষ্কার না হওয়ায় পারতপক্ষে এই রাস্তা দিয়ে যাই না।’’ ভ্যাট লাগোয়া বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভ্যাটের সাফাই অনিয়মিত হওয়ায় রাতে দুর্গন্ধ ঘরে ঢুকে যায়। জানলা বন্ধ করেও তা আটকানো যায় না। শুধু তাই নয়, কাক, কুকুর, বেড়াল ওই ভ্যাট থেকে ময়লা টানাটানি করে রাস্তায় ফেলে। সে সব চতুর্দিকে ছড়িয়ে রাস্তার নরকদশা হয়। ওই ভ্যাটের সামনেই একটি বহুতল আবাসন রয়েছে। আবাসনের এক বাসিন্দার আবেদন, ‘‘ফ্ল্যাটের সামনেই ভ্যাটটি থাকায় ভীষণ সমস্যা হচ্ছে।’’
ভ্যাটটি যে সমস্যার কারণ, তা মানছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সোমা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘বাম আমল থেকেই ভ্যাটটি রয়েছে। আমরা ভ্যাটটি সরিয়ে দেব। ২১৪, রাজা রামমোহন রায় রোডের সামনের ওই ভ্যাটে ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের পাশাপাশি ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের জঞ্জালও জমা হয়।’’ কাউন্সিলরের আশ্বাস, ‘‘পুরসভার সিদ্ধান্ত যে শহরে খোলা ভ্যাট থাকবে না। আমরা একটি বিকল্প জমিও দেখেছি। সেখানে কম্প্যাক্টর স্টেশন তৈরি করা হবে।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব। নিয়ম মতো পুরসভার তরফে নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হওয়ার কথা। বাসিন্দাদের অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে কাউন্সিলরের আরও সতর্ক থাকা দরকার।’’