নির্মল মাজি। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় প্রার্থী নিয়ে শাসকদলের অন্দরে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। ইতিমধ্যেই তা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নেতা-কর্মীদের একাংশ। সেই আবহে এ বার ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর কলকাতা শাখার নির্বাচনে সর্বোচ্চ পদেও তৃণমূলেরই এক জন অপর জনের প্রতিদ্বন্দ্বী!
ওই দু’জনের এক জন বিধায়ক-চিকিৎসক নির্মল মাজি। অপর জন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক প্রশান্ত ভট্টাচার্য। দু’জনেই লড়ছেন সভাপতি পদের জন্য। যদিও আইএমএ-র কলকাতা শাখা কর্তৃপক্ষের দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। কারণ, প্রার্থীদের মনোনয়ন রাজনৈতিক দলের নামে হয় না। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই যে কোনও নির্বাচনের নেপথ্যেই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের পরোক্ষ প্রভাব থাকেই। চিকিৎসকদের ওই সংগঠনের নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতি দু’বছর অন্তর আইএমএ-র কলকাতা শাখার কার্যকরী কমিটির নির্বাচন হয়। বিগত ছ’বছর ধরে সভাপতি পদে রয়েছেন নির্মল। ২০২০-তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন। সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন প্রশান্ত। তাঁর কথায়, “আইএমএ অরাজনৈতিক সংগঠন। সেখানে রাজনীতিকে না টেনে বরং দুই ব্যক্তির মধ্যে লড়াই বলা ভাল। সভাপতি পদে দাঁড়ানোর যোগ্যতা আমারও আছে, তাই মনোনয়ন জমা দিয়েছি।”
প্রশান্ত তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক বলেই পরিচিত। তৃতীয় ঢেউয়ে ডায়মন্ড হারবারে করোনার মোকাবিলায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচিতে তিনিই অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। দীর্ঘ দিন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তৃণমূল-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বও সামলেছেন। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যে কোভিড প্রোটোকল মনিটরিং দল তৈরি হয়েছিল, তাতেও বিশেষ দায়িত্বে ছিলাম। আর পুরনোরা সরে নতুনকে জায়গা দেবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক। নির্মলদাকে তাই এ বার না দাঁড়াতে অনুরোধ করেছিলাম। উনি রাজি হননি। গত বার থেকেই অনেকে আমাকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলছেন।”
অন্য দিকে, নির্মলের দাবি, “প্রশান্তের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা-সহ অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। জেলেও ছিলেন। সাইবার অপরাধের মামলাও চলছে। আইএমএ কলকাতা ঐতিহ্যবাহী জায়গা। এখান থেকেই সর্বভারতীয় সংগঠন তৈরি হয়েছে। তার সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখা প্রয়োজন।” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রশান্ত। আজ, শুক্রবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন। ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিনের পরেই বোঝা যাবে, ৩৪টি পদে কত জন লড়ছেন। ৫ মার্চ হবে ভোটগ্রহণ ও গণনা।