আশীর্বাদ: ঋতুপর্ণ ঘোষকে শ্রদ্ধা জানিয়ে রূপান্তরকামীদের নৃত্যনাট্য অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার। জ্ঞান মঞ্চে। —নিজস্ব চিত্র।
মস্ত মঞ্চে খড়-বিচালি দিয়ে বাঁধা প্রতিমার কাঠামো। দুর্গার সেই অবয়ব ঘিরেই যেন জেগে উঠল শক্তির বার্তা। রূপান্তরকামীদের নাচের দল ‘রুদ্রপলাশ’-এর এ বছরের ঋতু উৎসবের নৃত্যনাট্য যেন সেই শক্তিরই জয়গান গাইল। মঙ্গলবার, জ্ঞান মঞ্চের এই অনুষ্ঠানেও বাদ গেল না আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ। অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তের সঙ্গে গলা মিলিয়ে দর্শকাসন থেকে আওয়াজ উঠল, ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’।
রূপান্তরকামী নৃত্যশিল্পী তথা আইনজীবী মেঘ সায়ন্তনী তাঁর নাচের দল নিয়ে বিগত বছরগুলিতেও অভিনব ভাবে প্রয়াত চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন। এ বার তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায় একটি সংস্থা। মঞ্চে নৃত্যনাট্যের মাধ্যমে ঋতুপর্ণের ছবির ১০টি নারী চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলেন ১০ জন রূপান্তরকামী শিল্পী। মেঘ সায়ন্তনী বলেন, “ঋতুপর্ণকে পাথেয় করে রূপান্তরকামী শিল্পীদের প্ল্যাটফর্ম দিতে ও সমাজের সঙ্গে জুড়ে রাখতেই এই প্রয়াস। মঞ্চে রাখা প্রতিমার কাঠামোও নারীশক্তির প্রতীক। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋতুপর্ণ ঘোষের ১০টি নারী চরিত্র মঞ্চে জীবন্ত হয়ে উঠল। তারাও নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানাল। আমরাও চাই, আর জি করের নির্যাতিতা দ্রুত বিচার পাক।”
এ দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা বিধায়ক দেবাশিস কুমার। তাঁর মতে, “এই ব্যতিক্রমী কাজ রূপান্তরকামীদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে সাহায্য করবে।” অনুষ্ঠানে জীবনকৃতী সম্মান দেওয়া হয় অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী ও সোহাগ সেনকে। ঋতু সম্মান পেয়েছেন মমতাশঙ্কর, শাশ্বতী গুহঠাকুরতা, মালবিকা সেন, অনসূয়া মজুমদার, বাদশা মৈত্র, অলকানন্দা রায়, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। তাঁদের বক্তব্যেও ছিল বর্তমান পরিস্থিতির ছোঁয়া।