ফাইল চিত্র।
রাজ্য জুড়ে নিম্ন আদালতের ৩২ জন বিচারকের বদলির নির্দেশ সম্প্রতি জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই তালিকায় নাম রয়েছে আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক আশুতোষ সরকারেরও। তার পরেই আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, ওই আদালত চালু হওয়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
দীর্ঘ ন’মাস পকসো আদালতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ আদালতে সমস্ত শুনানি বন্ধ থাকায় চরম হয়রানিতে পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা। এমনিতে প্রতিদিন গড়ে এই আদালতে অন্তত পাঁচ-ছ’টি মামলা শুনানির জন্য ওঠে। সেখানে ন’মাস অচলাবস্থা চলায় ঝুলে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার মামলা।
এর আগে মার্চ থেকে অগস্ট পর্যন্ত লকডাউনের জন্য বন্ধ ছিল পকসো আদালত। লকডাউন-বিধি কিছুটা শিথিল হওয়ার পরে সেপ্টেম্বরে ফের আদালতের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ওই মাসের প্রথম সপ্তাহেই করোনা সংক্রান্ত সুরক্ষা-বিধি বলবৎ করা নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয় বিচারক ও আইনজীবীদের একাংশের মধ্যে। বিচারক তাঁদের অপমান করেছেন, এই অভিযোগ তুলে আদালত বয়কট করেন ওই আইনজীবীরা। ফের অচল হয়ে যায় আদালত। তখন থেকেই সব শুনানি বন্ধ রয়েছে সেখানে। জেলা বিচারক-সহ আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা একের পর এক বৈঠক করলেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির কাছে রফাসূত্র বার করার জন্য আর্জি জানায় বার অ্যাসোসিয়েশন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার হাইকোর্টের জ়োনাল বিচারপতির তরফে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। যদিও পরে তা বাতিল হয়। ফলে অবস্থার বিশেষ হেরফের হয়নি।
আইনজীবীদের একটি অংশের দাবি, বয়কটকারী আইনজীবীরা নিজেদের মতে অনড় থাকায় গত সেপ্টেম্বর থেকে আদালতে এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতি চলছে। লকডাউনের আগে বিশেষ পকসো আদালতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আশুতোষবাবু। কিন্তু তিন মাস সব কিছু বন্ধ থাকায় তিনি বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে ওই আইনজীবীদের দাবি। এ নিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন বিচারক। তাঁদের মতে, এই পরিস্থিতিতে হয়তো আশুতোষবাবু নিজেই বদলি হওয়ার জন্য সুপারিশ করে থাকতে পারেন। উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বিচারকদের যে বদলির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে আশুতোষবাবুকে বদলি করা হয়েছে নদিয়ার নিম্ন আদালতে।
আলিপুর আদালতের আইনজীবী তথা রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য ইন্দ্রনীল বসু বলেন, ‘‘নতুন বিচারক দায়িত্ব নেওয়ার পরেই পুরোদমে পকসো আদালতের কাজকর্ম আবার শুরু হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’