পালাতে গিয়ে পিছলে পড়েছেন হেলমেটহীন বাইকচালক ও আরোহী। মঙ্গলবার রাতে। ছবি সৌজন্য: এবিপি আনন্দ
বেপরোয়া মোটরবাইক আরোহীদের বিরুদ্ধে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলছে অভিযান। থানা ও ট্র্যাফিক গার্ড মিলিয়ে বিশাল বাহিনী শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রতি রাতে ওই অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরেনি অনেকের। অভিযোগ, রাতের শহরে তল্লাশি চললেও তাতে পরোয়া নেই এক শ্রেণির বাইকচালকের। হেলমেট ছাড়াই দুর্বার গতিতে ছুটে বেড়াচ্ছেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই অভিযান এখন চালিয়ে যাওয়া হবে। এবং বেপরোয়া মোটরবাইক দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পুলিশকে বলা হয়েছে, ধাওয়া করে কিংবা জোর করে কোনও বেপরোয়া বাইকচালককে আটকানোর প্রয়োজন নেই। তাতে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তার বদলে অভিযান চালানোর সময়ে গার্ডরেল দিয়ে পুরো রাস্তা আটকে দিতে বলা হয়েছে লালবাজারের তরফে।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতেই তল্লাশি অভিযান থেকে পালাতে গিয়ে একটি বাইক কলকাতা পুলিশের এক ট্র্যাফিক কনস্টেবলকে প্রায় ৫০ মিটার রাস্তা হিঁচড়ে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় জখম হন সেই পুলিশকর্মী। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি। আবার মঙ্গলবার রাতে মৌলালি মোড়ে একই ভাবে হেলমেটহীন এক বাইকচালক পুলিশকে দেখে পালাতে গিয়ে রাস্তায় পিছলে পড়ে যান। রাস্তায় পড়তেই বাইকআরোহীদের সামনে এসে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায় একটি ট্যাক্সি। সেটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি লরি। সেই ধাক্কার জেরে ট্যাক্সিটি দুই বাইক-আরোহীকে প্রায় ৩০ ফুট ঘষটে নিয়ে যায়। আরোহীদের কিছু না হলেও ক্ষতি হয় ট্যাক্সিটির। পরে দুই বাইক-আরোহীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। মঙ্গলবার মোট ৬০৭ জন মোটরবাইক চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার জন্য।
লালবাজারের কর্তারা জানাচ্ছেন, সোম ও মঙ্গলবারের দু’টি ঘটনাতেই তল্লাশি অভিযান এড়াতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বাইক-চালকেরা। আর তাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। ট্র্যাফিক-কর্তাদের একাংশ অবাক মোটরবাইক চালকদের এমন বেপরোয়া মনোভাব দেখে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি শহরের রাস্তায় পুলিশ দেখেও ভয় পাচ্ছেন না ওই বাইকচালকেরা। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, শহরের কয়েকটি রাস্তায় স্থানীয়দের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা রয়েছে। তা যাতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তার জন্য লাগাতার ওই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের মূল রাস্তাগুলির পাশাপাশি অলিগলির সংযোগস্থলেও এই অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও গার্ডরেল দিয়ে পুরো রাস্তা ঘিরে অভিযান চালাতে বলা হয়েছে, যাতে কোনও বাইক পালিয়ে যেতে না পারে। সেই সঙ্গে সোমবারের ঘটনার পরেই অভিযানে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশকর্মীকে শামিল করতে বলা হয়েছে।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘দু’টি ঘটনাই আমাদের নজরে এসেছে। তবে তল্লাশি অভিযানে থাকা পুলিশকর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটরবাইক ধাওয়া করতে যাবেন না।’’