ফাইল চিত্র।
সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গত বছর থেকে মেট্রোয় বন্ধ রয়েছে টোকেন বিক্রি। বর্তমানে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা আরও জোরদার হচ্ছে। ভবিষ্যতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরলেও টোকেন পরিষেবা পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বিকল্প হিসেবে স্মার্ট কার্ড এবং কিউ আর কোড-নির্ভর ‘মোবাইল টিকেটিং’ ব্যবস্থাকেই ভবিষ্যতের দিশা বলে মনে করছেন তাঁরা।
করোনা-পূর্ব পরিস্থিতিতে মেট্রোয় দৈনিক হাজারখানেক টোকেন খোয়া যেত। সে সময়ে ৫০ শতাংশ যাত্রী স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করলেও বাকিরা টোকেন ব্যবহার করতেন। তাই দৈনিক কয়েক লক্ষ যাত্রীর জন্য ব্যস্ত সময়ে বিভিন্ন স্টেশনে টোকেনের জোগান ঠিক রাখার পাশাপাশি, বুকিং কাউন্টারে পর্যাপ্ত খুচরো টাকার জোগানও রাখতে হত। বিশেষ দিনে কাউন্টার চালাতে বেশি সংখ্যক কর্মীও লাগত। সপ্তাহের কাজের দিনে বা উৎসবের সময়ে বিশেষ বিশেষ স্টেশনে টোকেনের চাহিদা এতটাই বেশি হত যে, অন্য স্টেশন থেকে সেখানে টোকেন পৌঁছে দিতে হত। বুকিং কাউন্টারে টোকেন নেওয়ার সময়ে খুচরো নিয়ে যাত্রী ও মেট্রোকর্মীদের মধ্যে বচসার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সেই তুলনায় স্মার্ট কার্ড অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট। যন্ত্রের মাধ্যমে সহজেই রিচার্জ করা যায়। তাই করোনা পরিস্থিতিতে স্পর্শ এড়াতে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের উপরেই জোর দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মেট্রোয় বর্তমানে প্রায় পাঁচ লক্ষ যাত্রীরই স্মার্ট কার্ড রয়েছে।
এর পাশাপাশি, দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর সম্প্রসারণ ছাড়াও কয়েক মাসের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ স্টেশন চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, জোকা-বি বা দী বাগ, নিউ গড়িয়া-রুবি, নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজও এগোচ্ছে। ফলে ওই তিনটি মেট্রোপথেও একাধিক নতুন স্টেশন চালু হবে। সেখানে বুকিং কাউন্টার সামলানোর মতো বিপুল সংখ্যক কর্মী রাতারাতি পাওয়া মুশকিল। ফলে বর্তমান মেট্রোকর্মীদেরই নতুন স্টেশনের দায়িত্ব সামলাতে হবে। তাই কাউন্টারের কর্মীদের ঝক্কি কমাতেই টোকেন ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
টোকেনের বিকল্প হিসেবে স্মার্ট কার্ডের পাশাপাশি অ্যাপ-নির্ভর কিউ আর কোডের মাধ্যমেও টিকিট কাটার ব্যবস্থা চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। ফলে অনেক কম সংখ্যক কর্মী দিয়েই বুকিং কাউন্টার চালানো যাবে। মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সংক্রমণ রুখতে এখন টোকেন বন্ধ। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, বলা মুশকিল। তাই নতুন ব্যবস্থা গতি পাচ্ছে। ফলে টোকেন ফেরানোর সম্ভাবনা দুর্বল হচ্ছে।’’