ফিরহাদ হাকিম। ফাইল ছবি
কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের প্রত্যাবর্তনে মেয়র হবেন কে? এমন প্রশ্ন রেখেই শুক্রবার প্রকাশিত হল শাসক তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা। কলকাতার ১৪৪ ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে প্রার্থী তালিকার খুঁটিনাটি নিয়ে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা জানান এ বার মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে কোনও মুখ সামনে না রেখেই লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল। পার্থ বলেন, ‘‘ভোটের পরে জয়ী পুর প্রতিনিধিরা নেতা নির্বাচন করবেন।’’ আর তা জানার পরে বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। নির্বাচনের পরে দলের পক্ষ থেকে যা নির্দেশ দেওয়া হবে সেই মতো চলব।’’
২০১১ সালে লালবাড়ি মহাকরণ দখল করলেও তৃণমূল তার ১১ বছর আগে ২০০০ সালেই ছোট লালবাড়ি কলকাতা পুরসভা দখল করে। সেই সময়ে তৃণমূল লড়েছিল সদ্য প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে মেয়র পদপ্রার্থী করে। তখন কংগ্রেস বিধায়ক হয়েও তৃণমূলের টিকিটে পুরসভা নির্বাচনে অংশ নেন সুব্রত। সে বার জিতে মেয়র হন। যদিও পরের নির্বাচনের আগে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতান্তরে তিনি ঘড়ি চিহ্ন নিয়ে পুরসভায় লড়েছিলেন। সে বার তৃণমূল কাউকেই মুখ করে লড়েনি। জিততেও পারেনি। মেয়র হন বামফ্রন্টের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
এর পরে ২০১০ সালে মুখ ছাড়া লড়াই করেই জেতে তৃণমূল। মেয়র হন শোভন চট্টোপাধ্যায়। গত পুরসভা নির্বাচন অর্থাৎ ২০১৫ সালে শোভনই ছিলেন মুখ। কিন্তু মাঝপথে তৃণমূল ছেড়ে দেন ২০১৮ সালের নভেম্বর। পুর-প্রতিনিধি না হয়েও মেয়রের চেয়ারে বসেন ফিরহাদ। সেই সময়ে তৃণমূল সরকার পুর আইনে পরিবর্তন এনেছিল শুধুমাত্র ফিরহাদকে মেয়র করার জন্য। নতুন আইনে ঠিক হয়, মন্ত্রিসভার মতো মেয়র হওয়ার পরেও ছ’মাসের মধ্যে জিতে আসতে হবে। পরে কলকাতার চেতলার ৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে আসেন ববি।
এ বারেও সেই ৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই প্রার্থী হয়েছেন ফিরহাদ। তবে তাঁকে প্রার্থী করা হবে কি না এ নিয়ে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত নানা জল্পনা ছিল। তৃণমূল সূত্রে এমনটা জানা গিয়ছিল যে দলের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি কার্যকর করে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদকে পুরসভায় প্রার্থী করা হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায় ফিরহাদ একা নন, তৃণমূলের ছয় বিধায়ক ও এক সাংসদ প্রার্থী হয়েছেন।