বগটুই-কাণ্ডে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত। তার দায় দলের নয়। এ ভাবেই অনুব্রতের সূচপুর-মন্তব্য থেকে দূরত্ব রচনা করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। শুক্রবার বগটুই-কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের অনতিবিলম্বে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল। জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে সিবিআই তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে অনুব্রতের একটি মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয় কুণালকে। যার উত্তরে কুণাল জানান, অনুব্রত বড় নেতা। তিনি তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করছেন। অর্থাৎ, অনুব্রতের ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের দায় নিচ্ছেন না তাঁরা, হাবভাবে সেটাই বুঝিয়ে দেন তৃণমূল মুখপাত্র।
বৃহস্পতিবার বগটুইয়ের স্বজনহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ন্যায়বিচারের কথা বলছেন, পুলিশকে তখন একটি নির্দেশ দিতে শোনা যায় অনুব্রতকে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “সূচপুরে যেমন সাজিয়েছিল…। এখনও জেলে রয়েছে…।” আর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে বিরোধীরা। বিজেপি-র অভিযোগ, পুলিশ কী করবেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতারা বলে দিচ্ছেন। তা হলে ন্যায়বিচার হবে কী করে?
উল্লেখ্য, দু’দশক আগে সংগঠিত হয় সূচপুর হত্যাকাণ্ড (নানুর হত্যাকাণ্ড)। এই হিংসার ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল ১১ জনের। আর ২০২২ সালে সেই বীরভূম জেলারই আরও একটি জায়গা বগটুই এখন রাজ্য রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেন, “এ রকম নৃশংস ঘটনা কখনও ঘটতে পারে, ভাবতেও পারিনি।” তিনি পুলিশকে নির্দেশে বলেন, “কেসটা খুব ভালভাবে আটঘাট বেঁধে সাজাতে হবে। কারণ, আমি শুনেছি আগের কেস...। তিন-চার বছর আগে এখানে একটা খুন হয়েছিল। হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছে (অভিযুক্ত)।” ঠিক তখনই অনুব্রতকে বলতে শোনা যায়, সূচপুরের মতো ‘কেস সাজাতে’ হবে। তবে বিতর্কের মুখে দল তাঁর এই মন্তব্য থেকে দূরত্ব রচনা করল। অন্য দিকে, কুণালের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অনুব্রতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কুণাল ঘোষ কী বলেছেন, তা নিয়ে কিছু আমি বলতে রাজি নই। আদালত যা রায় দিয়েছে, সেটা ভাল।’’