যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
রসায়নের বিভাগীয় প্রধানকে হেনস্থা এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধানকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির নেতা বিনয় সিংহকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিলেন কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, রসায়ন বিভাগের শিক্ষাকর্মী উদয়ভান সিংহকে তাঁর ব্যবহারের জন্য কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রসায়ন বিভাগের ঘটনায় হেনস্থার অভিযোগের তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে ক্যাম্পাসের যে ভবনগুলিতে পঠনপাঠন হয়, সেখানে ঢুকতে পারবেন না উদয়ভান। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এ কথা জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, দেরি করে আসায় ক্লাসরুম খোলার দায়িত্বে থাকা উদয়ভানকে মঙ্গলবার প্রথমার্ধের বদলে দ্বিতীয়ার্ধে হাজিরা খাতায় সই করতে বলেন রসায়নের বিভাগীয় প্রধান স্বপনকুমার ভট্টাচার্য। বুধবার ওই শিক্ষাকর্মীকে ক্লাসরুম খুলতে বলা হলে তিনি তা করতে অস্বীকার করেন। তখন বিভাগীয় প্রধান নিজেই ক্লাসরুম খোলেন। এর পরে ওই শিক্ষাকর্মী বিনয় এবং অন্যদের ডেকে আনেন বলে অভিযোগ। হাজিরা খাতায় প্রথমার্ধে কেন সই করতে দেওয়া হবে না, এই প্রশ্ন তুলে বিনয় ও তাঁর দলবল তাঁকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা এবং গালিগালাজ করার পাশাপাশি হাজিরা খাতা কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেছেন বলে বিভাগীয় প্রধানের অভিযোগ।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জুটা রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবাদ জানায়। এ দিন বিকেলে দলে দলে শিক্ষক সেই প্রতিবাদে শামিল হন। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে তাঁরা অবস্থানে বসে পড়েন। জুটা-র সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ‘‘কোনও অভিযোগ থাকলে শিক্ষাকর্মীরা কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানাতেই পারেন। তার বদলে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা কখনওই মেনে নেওয়া হবে না।’’ বিনয় অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। বরং তাঁর দাবি, হাজিরা খাতায় সই করতে না দিয়ে রসায়নের বিভাগীয় প্রধানই ‘অগণতান্ত্রিক’ কাজ করেছেন।
শুধু একটি অভিযোগ নয়, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্মী বিনয় তাঁর দফতরে কাজে নিয়মিত নন বলে খবর। তিনি বিভাগীয় প্রধানকে ফোনে হুমকি দিয়েছেন বলেও এ দিন ওই বিভাগের প্রধান পার্থ ভট্টাচার্য রেজিস্ট্রারকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন। এর পরে দুই অভিযোগের জেরে বিনয়কে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।