এ বার খাস কলকাতায় কাটমানি খাওয়ার অভিযোগে পোস্টার পড়ল শাসক দলের এক কাউন্সিলরের নামে!
মঙ্গলবার ভোরে উল্টোডাঙার মুরারিপুকুর রোডে বেশ কয়েকটি জায়গায় ওই পোস্টার দেখা গিয়েছে। দেওয়ালে সাঁটানো ওই সমস্ত পোস্টারে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পোস্টারগুলির উপরে লেখা, ‘জয় শ্রীরাম’। নীচে লেখা, ‘মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সাধন পাণ্ডের মদতে তাঁর বিধানসভার অন্তর্গত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী বেআইনি কনস্ট্রাকশন দিয়ে এবং কলের লাইন ও ড্রেনের লাইনের জন্য যত টাকা কাটমানি খেয়েছেন, ফেরত দিন।’ লেখাটির নীচে আবার রয়েছে ‘মুকুল রায় জিন্দাবাদ, দিলীপ ঘোষ জিন্দাবাদ’। আর একেবারে নীচে লেখা ‘ভারতীয় জনতা পার্টি জিন্দাবাদ।’ যদিও ওই কাউন্সিলর বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এ দিন সকালে উঠেই স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে পড়ে ওই পোস্টার। মুহূর্তেই গুঞ্জন শুরু হয় যায় এলাকায়। কারণ, তাতে শুধু কাউন্সিলর নয়, এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মদতের কথাও লেখা হয়েছে। তৃণমূলেরই স্থানীয় কিছু যুবক ওই পোস্টার ছিঁড়তে শুরু করে দেন। তত ক্ষণে অবশ্য ওই পোস্টারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’।
পোস্টারে বিজেপি-র নাম থাকলেও তা আদৌ বিজেপি-র কাজ কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তৃণমূলেরই একাংশ। যাঁর নামে পোস্টার পড়েছে, সেই অমলবাবুও জানিয়েছেন, তাঁর দলেরই কেউ এ সব করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই পোস্টার আমার দলেরই কেউ সাঁটিয়েছে। খোঁজ নিচ্ছি। দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানাব।’’
উল্টোডাঙার ওই কাউন্সিলর এবং স্থানীয় বিধায়ক আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন। এক সময়ে পরেশ পালের ঘনিষ্ঠ ছিলেন অমলবাবু। তখন সাধন পাণ্ডের সঙ্গে শীতল সম্পর্ক ছিল তাঁর। নানা বিষয়ে একাধিক বার মন্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছে অমলবাবুর। মাঝে কিছু দিন সাধনবাবুর সঙ্গে ছিলেন তিনি। সে সময়ে তাঁর এলাকায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সাধনবাবু। ইদানীং তাঁদের সম্পর্ক মধুর ছিল না। কিন্তু পোস্টারে সাধনবাবুর কথা থাকায় তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, তিনি অসুস্থ।
যাদের নাম দিয়ে ওই পোস্টার সাঁটা হয়েছে, সেই বিজেপি-র দাবি, ওই পোস্টার তারা দেয়নি। দলের উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি দীনেশ পাণ্ডে বলেন, ‘‘কারা ওই পোস্টার দিয়েছেন, জানি না। তবে ওই পোস্টারের বক্তব্যের সঙ্গে আমরা সহমত।’’