ভোটের বাজারে মাছে চোখ। রবিবার করুণাময়ীতে অসীম দাশগুপ্ত। — নিজস্ব চিত্র।
পরিচিত সাদা প্যান্ট-শার্ট। কালো জুতো। সঙ্গে বৃষ্টিতে মাথায় লাল ছাতা। তিনি হাঁটছেন।
কখনও ভিড়ে ঠাসা বাজারে। কখনও রাজপথে। কোথাও হাত মেলাচ্ছেন লোকেদের সঙ্গে। কোথাও কলিংবেল বাজিয়ে গৃহকর্তা দরজা খুললেই হাত জো়ড় করে বলছেন, ‘‘নমস্কার। আমি অসীম দাশগুপ্ত। ৩ তারিখ সকাল সকাল গিয়ে ভোট দেবেন। এটাই অনুরোধ।’’ রবিবার সকালে এ ছবিই দেখল সল্টলেকের করুণাময়ী বাজার ও করুণাময়ী আবাসন।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে নিজের কেন্দ্র খড়দহে এ ভাবেই ঘুরেছিলেন বাড়ি-বাড়ি। ২০১৪-য় লোকসভা ভোটের সময়ে দমদমেও একই ভাবে ভোট চাইতে দেখা যায় তাঁকে। দু’বারই অসীমবাবুর আহ্বানে সাড়া দেয়নি তাঁর কেন্দ্র। তার পরে এই ২০১৫-য় বিধাননগর পুর নিগমের ভোটের জন্য ফের পথে তিনি।
আগামী ৩ অক্টোবরের সেই ভোট লোকসভা-বিধানসভার তুলনায় কলেবরে অনেক ছোট। তবে পুর-নিগমের ভোটে সিপিএমের ‘মুখ’ অসীমবাবু একে খাটো করে দেখতে নারাজ। কারণ শুধু ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে জেতাই নয়, তাঁকে সামনে রেখেই সিপিএম বিধাননগরে ‘শিলিগুড়ি মডেল’ তৈরির কথা ভাবছে। ফলে দলীয় প্রার্থীদের জেতানোর অনেকটা দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। অসীমবাবুর কথায়, ‘‘বিধানসভার সময়ে অন্য হাওয়া ছিল। লোকসভার সময়ে বেলা ১টার পরে ভোট করতে দেওয়া হয়নি। এ বার মানুষ সাড়া দিচ্ছেন। প্রচারে বেরোলেই বুঝতে পারছি। আমরা আশাবাদী।’’
এ বার কার্যত নিজের পাড়াতেই প্রার্থী। এফই ব্লকে অসীমবাবুর বাড়ির কাছাকাছি ডিএল, ইই ব্লক, করুণাময়ী ও সৌরভ আবাসন সবই ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে। অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন কনভয় নিয়ে বিকেলে ব্রডওয়েতে হাঁটতে দেখা যেত। পরে প্রাতর্ভ্রমণ কিংবা বৈকালিক ভ্রমণেও এফই পার্কে যেতেন তিনি। এ বার সেখানেই ভোটের জন্য হাঁটা। নির্বাচন ঘোষণার পরে এ দিনই প্রথম করুণাময়ী বাজার থেকে প্রচার শুরু করলেন। বৃষ্টিতে দলীয় কর্মীরা মাথায় ছাতা ধরেছিলেন। নিজেই তা টেনে নিলেন হাতে। এর পরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে টুকরো-টুকরো কথা। কোথাও আতা কিনলেন, কোথাও বেগুন। মাছের দোকানে পৌঁছে হাতে তুলে নিলেন আস্ত কাতলা। সঙ্গে চলল ছবি তোলা, নিজস্বীও। পরের গন্তব্য করুণাময়ী আবাসন। লিফ্ট নেই, পায়ে হেঁটেই একতলা থেকে চারতলা ওঠা-নামা। প্রচার সারলেন উনসত্তর বছরের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।