—ফাইল চিত্র।
কেব্ল টিভি, টেলিফোন, ইন্টারনেট পরিষেবার তারের জট আজও কলকাতার অন্যতম সমস্যা। তাই বছর কয়েক আগেই বিদ্যুৎ পরিষেবা ছাড়া বাকি সব কিছুর তার মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু তা আজও ঠিক মতো কার্যকর করা হয়নি। শনিবার নবান্নে সব পক্ষকে নিয়ে এক বৈঠকে দ্রুত সেই নির্দেশ কার্যকর করতে বললেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন তথা পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত মাল্টি সার্ভিস অপারেটর (এমএসও), টেলিকম ও ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থা এবং কেব্ল অপারেটরদের ওই নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বিশেষ করে কয়েকটি টেলিকম সংস্থা মাটির নীচে দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার অনুমোদন নিলেও বাস্তবে
অনেকেই বাতিস্তম্ভ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার রেখেই পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। পরে ফিরহাদ জানান, হরিশ মুখার্জি রোডে মাটির নীচের টানেল সম্পূর্ণ হয়েছে। তার ভিতর দিয়েই কেব্ল এবং ইন্টারনেটের তার নিয়ে যেতে হবে। শহরের আর কোন কোন রাস্তায়, কী ভাবে এমন টানেল করা সম্ভব, সাত দিনের মধ্যে পুলিশ তার রিপোর্ট দেবে। এর জন্য পুরসভা, পুলিশ এবং সিইএসসি-কে নিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে নিষ্ক্রিয় তারগুলি সরিয়ে দেওয়া হবে। এই সমীক্ষা সম্পূর্ণ হলে সর্বত্র ফুটপাতের তলা দিয়ে টানেলের মাধ্যমে কেব্ল, ইন্টারনেটের তার নিয়ে যাওয়া হবে। পরে বাতিস্তম্ভ থেকে সেগুলি বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে। মাটির উপর দিয়ে যাবে শুধুমাত্র বিদ্যুতের তার। ফিরহাদ বলেন, “বাতিস্তম্ভগুলিও অত তারের ভার নিতে পারছে না। সেগুলি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মাটির উপর দিয়ে এত তার গেলে আগুন নেভানোর ল্যাডার ব্যবহারেও মুশকিল হচ্ছে। তার কেটে ল্যাডার ব্যবহারে অনেক সময় লাগে। সে সব এড়াতেই
এই সিদ্ধান্ত।”
তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মাটির নীচের কাজ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত মাটির উপরে থাকা তার কাটা হবে না। কারণ আগেভাগে তা সরাতে গিয়ে পরিষেবায় বিপত্তি ঘটলে বাড়ি থেকে কাজ এবং পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে।
এ নিয়ে শহরের অন্যতম এমএসও, সিটি কেব্লের কর্তা সুরেশ শেঠিয়া বলেন, ‘‘গত বছর প্রশাসনের সঙ্গে মিলে রুবি হাসপাতাল এলাকা থেকে চেতলা পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় তারগুলি কেটে দিয়েছিলাম। তার পরে করোনার ধাক্কায় কাজ ব্যাহত হয়। কাজটি কঠিন হলেও শহরের সৌন্দর্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে এ বারও পূর্ণ সহযোগিতা করব। একেবারে
পুরোটা মাটির নীচ দিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না-হলেও যতটা সম্ভব করা হবে।’’ কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও বিশ্ব বাংলা কেব্ল টিভি অপারেটর্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজারহাটের মডেলে প্রশাসন থেকে পাইপ বা টানেল তৈরি করে দিক। না-হলে আমাদের পক্ষে সেই খরচের বোঝা বহন করা কঠিন।’’