Arrest

পুণ্যার্থীদের মাদক খাইয়ে লুটপাটের ছক বানচাল, ধৃত ৩

পুণ্যার্থীদের সঙ্গে নিজে থেকে বন্ধুত্ব পাতানোর চেষ্টা দেখে সন্দেহ হয় স্টেশনে টহলরত আরপিএফের বিশেষ বাহিনীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫১
Share:

ধৃতেরা সকলেই বিহারের বাসিন্দা। —প্রতীকী চিত্র।

গঙ্গাসাগর এবং প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই হাওড়া স্টেশনে এসে উপস্থিত হয়েছেন অসংখ্য পুণ্যার্থী। তাঁদেরই একটি দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে, খাবারে মাদক মিশিয়ে তাঁদের সঙ্গে থাকা বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুটপাটের মতলব করেছিল জনা কয়েক দুষ্কৃতী। তাদের পুণ্যার্থীদের সঙ্গে নিজে থেকে বন্ধুত্ব পাতানোর চেষ্টা দেখে সন্দেহ হয় স্টেশনে টহলরত আরপিএফের বিশেষ বাহিনীর। ট্রেনটি ঘিরে ফেলে সন্দেহভাজন তিন দুষ্কৃতীকে ধরে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ মাদক। খবর পেয়ে রেল পুলিশ এসে গ্রেফতার করে ওই তিন দুষ্কৃতীকে। ধৃতদের নাম শম্ভু পাসোয়ান, গোবিন্দকুমার মাহাতো এবং মহম্মদ ইরফান। সকলেই বিহারের বাসিন্দা।

Advertisement

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১১টা নাগাদ হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সের সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল আপ হাওড়া-মোকামা এক্সপ্রেস। লুটপাটের উদ্দেশ্যে সেই ট্রেনে যাত্রী সেজে ওঠে কয়েক জন দুষ্কৃতী। ওই দলটির আরও কয়েক জন সদস্য আগে থেকেই স্টেশনে ঘোরাঘুরি করছিল। মূলত প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের উদ্দেশে রওনা হওয়া পুণ্যার্থীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে, তাঁদের মাদক মেশানো ফলের রস, খেজুর, ট্যাবলেট খাওয়ানোর চেষ্টা করছিল তারা। কয়েক জন যাত্রীকে মাদক মেশানো জল ও খেজুর খেতেও দেয়। বিষয়টি নজরে আসতেই প্ল্যাটফর্মে টহলরত আরপিএফের বিশেষ বাহিনী ট্রেন ছাড়ার মিনিট পাঁচেক আগে রাত ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি ঘিরে ফলে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তিন অভিযুক্ত ট্রেন থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করতেই তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন আরপিএফ জওয়ানেরা।

রেল পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতী দলটির লক্ষ্য ছিল ওই পুণ্যার্থীদের মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে অচেতন করে তাঁদের মোবাইল, টাকা-সহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করা। ধৃতদের সঙ্গে থাকা ব্যাগে তল্লাশি চালাতেই তাজ্জব হয়ে যান আরপিএফের আধিকারিকেরা। ধৃত শম্ভু পাসোয়ানের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২২টি সিল করা মাদক ট্যাবলেটের স্ট্রিপ, একটি প্লাস্টিকের বোতলে মাদক মিশ্রিত ফলের রস, মাদকযুক্ত তিনটি খেজুর। গোবিন্দকুমার মাহাতোর কাছ থেকে মিলেছে ১২টি মাদক ট্যাবলেটের প্যাকেট, মাদকযুক্ত এক লিটার পানীয়। গ্রেফতার হওয়া তৃতীয় দুষ্কৃতী, মহম্মদ ইরফানের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২৫টি মাদক ট্যাবলেটের প্যাকেট, প্রায় এক লিটার মাদকযুক্ত পানীয় এবং নগদ ৩৫০০ টাকা।

Advertisement

রেল পুলিশের এক পদস্থ কর্তা রবিবার বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের সাত দিনের জন্য হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে।’’ ওই পুলিশকর্তা জানান, গঙ্গাসাগর এবং প্রয়াগরাজে শুরু হতে চলা মহাকুম্ভের জন্য হাওড়া স্টেশন দিয়ে দৈনিক প্রায় ৫০ হাজার অতিরিক্ত যাত্রী যাতায়াত করছেন। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে স্টেশনে চালানো হচ্ছে বিশেষ নজরদারি। তার জন্যই বড়সড় এই লুটের ঘটনা এড়ানো গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement