কিশোরীর মৃত্যুর পর ভোর রাত থেকে সিএমআরআই হাসপাতালে তাণ্ডব চলল। এলাকার বেশ কিছু পরিচিত মুখ সেই তাণ্ডব ও ভাঙচুর চালাল। তাদের ছবি সরাসরি টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গেল। সিসিটিভি ফুটেজেও তাদের দেখা যাওয়ার কথা। কিন্তু ধরা পড়ল মাত্র পাঁচ জন। মূল অভিযুক্ত মহম্মদ সাকিল, শাহবাজ ও মহম্মদ ওয়াহাব এখনও ফেরার। এলাকার পরিচিত মুখ হওয়া সত্ত্বেও তাণ্ডবকারীদের নিদিষ্ট নামে এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে এলাকাবাসীদের একাংশে। মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন অনুযায়ী মূল অভিযুক্তরা রানিগঞ্জ হয়ে বিহারে চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আমরা জোরদার তল্লাশি করছি, অভিযুক্তরা বার বার জায়গা বদলাচ্ছে। তবে ওরা ধরা পড়বেই।’’
সিএমআরআই হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনার দিন শাসক দলের কোনও নেতাকে হাজির হতে দেখা যায়নি। তাণ্ডবকারীরা ডায়মন্ড হারবার রোড অবরোধ করল। কিন্তু শাসক দলের কোনও নেতাকেই ঘটনাস্থলে হাজির হতে দেখা যায়নি।
পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাকিল বাহিনীর ঝামেলা নতুন কিছুই নয়। বছর দেড়েক ধরেই বন্দর এলাকার নানা রোগীর প্রসঙ্গ নিয়ে সাকিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঝামেলা করে চাপ সৃষ্টি করত বলে অভিযোগ। বছর দুয়েক আগে হাসপাতালের এক কর্মচারীকে বদলি করা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরোধ শুরু হয়। শুরু হয় এক ধরনের ঠান্ডা লড়াই। অভিযোগ, সেই প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই সাকিল ও তার দলবলকে কাজে লাগানো শুরু করে। সাকিল বাহিনী বন্দর এলাকার ভর্তি হওয়া রোগীদের বিষয়ে হাসপাতালে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে। কোনও ক্ষেত্রে হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ উঠলেই ঝামেলা করত সাকিল বাহিনী। শেষ ঘটনাতেও সাকিল ও তার দলবল ভাঙচুরের সময় সক্রিয় ছিল বলে খবর। যার অর্থ, ওই ধিনের গোলমাল একটি মেয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বড় আকার নিলেও তার সলতে পাকানো শুরু হয়েছে বছর দেড়েক আগে। ঘটনার পর স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, সেই কারণেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করে সাকিল বাহিনীর বিরুদ্ধে নিদিষ্ট এফআইআর করতে দেওয়া হয়নি।