—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর-কাণ্ডের জেরে উত্তপ্ত চিকিৎসক মহল। প্রায় সকলেই সুবিচার ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। সে জন্য তাঁদের ফোন করে হুমকি দেওয়া ও ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-এর রাজ্য শাখা। অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিশেষ ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর (উত্তরবঙ্গ লবি) ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। যাঁরা অনেকেই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্য বলে দাবি আইএমএ-র।
আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন আইএমএ-র রাজ্য শাখার সদস্যেরা। সেখানে ১৫ জন অধ্যক্ষ যোগ দেন। যাঁরা প্রত্যেকেই বর্তমান স্বাস্থ্য প্রশাসন সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বুধবার চিকিৎসকদের ওই সংগঠন এক বিবৃতিতে দাবি করে যে, বৈঠকে দক্ষিণবঙ্গের এক মেডিক্যাল কলেজের মহিলা অধ্যক্ষ অভিযোগ করেন, অন্যায় আবদার না মানায় ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র এক সদস্য তথা চিকিৎসক-পড়ুয়া তাঁকে ফোনে হুমকি দেন ও কটূক্তি করেন। আরও দাবি, বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরে জানালেও পদক্ষেপ করা হয়নি।
উত্তরবঙ্গের এক অধ্যক্ষের আবার অভিযোগ, তাঁর কলেজের এক শিক্ষক-চিকিৎসক পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। গণ-টোকাটুকির প্রতিবাদ করায় উত্তরবঙ্গের একটি কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসককে পরীক্ষা চলাকালীন ‘ইনভিজিলেটর’-এর পদ থেকে তৎক্ষণাৎ সরানো হয়েছে। অধ্যক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করে তাঁকে পরীক্ষক পদ থেকেও সরানো হয়। পরে তাঁকে কলকাতায় বদলি করা হয়। শহরতলির এক অধ্যক্ষ দাবি করেন, চলতি বছরে পরীক্ষার খাতা রিভিউ করে দেখা উচিত। কারণ, অন্তত ৪০ শতাংশ খাতায় উত্তর হুবহু এক। এই দাবিকে অন্য অধ্যক্ষেরাও সমর্থন করেন। কী ভাবে পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র বিক্রি হতে পারে এবং পাশ-ফেল কে করবে, তা কী ভাবে ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ স্থির করতে পারে— সেই প্রশ্নও ওঠে। সেখানে ওই গোষ্ঠীর দুই উঠতি নেতার নামও উঠে আসে।
বৈঠকে অনেকের অভিযোগ, আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়া-ডাক্তারদের মারধর, এমনকি ফেল করানোর ভয়ও দেখানো হচ্ছে। এত কিছুর পরেও ‘উত্তরবঙ্গ
লবি’র এত প্রভাব কী ভাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে বৈঠকে। আইএমএ-র তরফে দাবি, প্রায় ভেঙে পড়া অচল স্বাস্থ্য-শিক্ষা ব্যবস্থার পুনরুদ্ধার করতে সরকারকে নিরপেক্ষ ভাবে
কাজ করতে হবে। কঠিন সিদ্ধান্ত
নিতে হবে।