Thread Ceremony

তৃণমূলের উদ্যোগে এ বার উপনয়ন উৎসব, ওয়ার্ড জুড়ে পড়েছে হোর্ডিং

আগামী ২১ মে কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে উপনয়ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসব উপলক্ষে ওয়ার্ড জুড়ে পড়েছে হোর্ডিং, ব্যানার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ০৮:০৩
Share:

উপনয়ন উৎসবের মূল উদ্যোক্তা স্থানীয় তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি কাকলি সেন। ফাইল ছবি।

জনসংযোগ বাড়াতে গণবিবাহ উৎসব উদ্‌যাপনে শামিল হতে দেখা যায় রাজনীতিকদের। সেই পথে হেঁটেই এ বার আয়োজন করা হচ্ছে উপনয়ন উৎসবের। আগামী ২১ মে কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসব উপলক্ষে ওয়ার্ড জুড়ে পড়েছে হোর্ডিং, ব্যানার। হোর্ডিংয়ে দাবি করা হচ্ছে, ‘বাংলায় এই প্রথম বার’। এর মূল উদ্যোক্তা স্থানীয় তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি কাকলি সেন। প্রধান পৃষ্ঠপোষক ওই পুর প্রতিনিধির স্বামী তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। হোর্ডিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবি ছাপানো হয়েছে।

Advertisement

যোগাযোগের জন্য হোর্ডিংয়ে রয়েছে মোবাইল নম্বর। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা কাকলি সেন বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ১৫ জনের উপনয়নের ব্যবস্থা করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। ওয়ার্ডে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হোর্ডিং। হোর্ডিংয়ের মোবাইল নম্বর দেখে ফোনে সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। উপনয়নের অনুষ্ঠান খরচসাপেক্ষ। অনেক গরিব মানুষ রয়েছেন, যাঁদের উপনয়ন দেওয়ার সাধ থাকলেও তা সাধ্যের বাইরে। তাঁদের জন্যই এইঅনুষ্ঠানের আয়োজন।’’ ২১ মে উপনয়ন উৎসবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিধায়ক অতীন ঘোষের উপস্থিত থাকার কথা।

শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এ হেন উপনয়ন উৎসব ঘিরে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। কলকাতা পুরসভার বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘রাজনীতির একটা অন্য আঙ্গিক রয়েছে। রক্তদান, গণবিবাহ উৎসবের মধ্যে সাধারণ মানুষকে সেবা করার একটা আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। কিন্তু গুটিকয়েক কিশোর, যুবকের উপনয়নের জন্য যে ভাবে ওয়ার্ড পোস্টার, হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গিয়েছে, তা রাজনৈতিক গিমিক ছাড়া কিছুই নয়।’’ বাম পুরপ্রতিনিধি মধুছন্দা দেবের পর্যবেক্ষণ, ‘‘তৃণমূলের উদ্যোগে উপনয়ন উৎসব আসলে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি।’’ কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি সন্তোষ পাঠকের দাবি, ‘‘হিন্দু ভোট বাড়াতেই তৃণমূল এ বার উপনয়ন উৎসবে শামিল হল।’’ প্রশ্ন উঠেছে, শুধু একটি ধর্মের, একটি বর্ণের পুরুষ প্রতিনিধিদের জন্য এই আয়োজন কেন? তাতে কি অন্য সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন না?

Advertisement

তবে সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে কাকলির ব্যাখ্যা, ‘‘এই উৎসবের সঙ্গে রাজনীতি মেশানো একেবারেই অনুচিত। জাত-পাতের বিষয়টিও টানা উচিত নয়। শুধু আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতেই এই আয়োজন।’’ শান্তনুর কথায়, ‘‘সমাজকে বাদ দিয়ে রাজনীতি হয় না। শুধু রাজনৈতিক কচকচানি নয়। প্রকৃত রাজনীতিতে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই উপনয়ন উৎসবের উদ্দেশ্য।’’

এ প্রসঙ্গে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক অভিজিৎ কুণ্ডুর ব্যাখ্যা, ‘‘উল্টো পথে হাঁটছে বাংলা। যা থাকার কথা ব্যক্তিগত পরিসরে, সে সব নিয়ে আসছে নাগরিক সমাজে। এর থেকেও বৃহত্তর প্রশ্ন, দ্বিজত্বে কি সরকারি সিলমোহর দেওয়া হল?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement