প্রতীকী ছবি
আর আংশিক নয়, এ বার পূর্ণ লকডাউনের কথাই ভাবছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। সোমবার পুরসভার আংশিক লকডাউন শেষ হল। এই সপ্তাহে রাজ্য সরকারের ঘোষিত লকডাউন বাদে আর কোনও লকডাউন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। আগামী সোমবার থেকে ফের লকডাউন হবে। পুর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের পর্যবেক্ষণ, সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে বাজার থেকে। ফলে সকালের বাজার খুলে সারা দিন বাজার বন্ধ করে বিশেষ লাভ হচ্ছে না।
সেই জন্য আগামী সোমবার থেকে সপ্তাহে দু’দিন পূর্ণ লকডাউন করার পরিকল্পনা করেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। রাজ্যের দু’দিনের লকডাউনের পাশাপাশি এই পুর এলাকায় আরও দু’দিন লকডাউন করলে মোট চার দিন লকডাউন থাকবে সেখানে। তা হলে তিন দিন বাজার খোলা থাকবে। ফলে বাজারের ভিড়ে অন্তত কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আসবে বলে মনে করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এই পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য প্রবীর পাল জানান, কবে কবে লকডাউন হবে, পুর বোর্ডের বৈঠকে দু’-এক দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। প্রবীর বলেন, “বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই আমরা সব এলাকায় প্রচার করব। যাতে সকলে জানতে পারেন। তাঁরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারবেন।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহে এই পুর এলাকায় ৩০০ জনের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। গত সপ্তাহে এই সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল।
সারা জেলার মধ্যে দমদম থানা এলাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধির হার বরাবরই তালিকার উপরের দিকে থেকেছে। যদিও দমদম পুর এলাকায় সংক্রমণের হার অনেকটাই কম। গত সপ্তাহে এই পুর এলাকায় ১৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। লকডাউনের ফলে প্রায় সারা দিন দোকান-বাজার বন্ধ থাকছিল। নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল যান চলাচলও। কিন্তু তার পরেও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হার আতঙ্কে ফেলেছে পুর কর্তৃপক্ষকে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে উঠে এসেছে, সব থেকে বেশি ভিড় হচ্ছে সকালের বাজারে। মূলত আনাজ এবং মাছের বাজারে ভিড় বেশি হচ্ছে। ফলে এই ভিড় নিয়ন্ত্রণ না করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ছোঁয়া যাবে না।
পুরসভার প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয়েছে, লকডাউন যাতে পর পর না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। পরের সপ্তাহে রাজ্যের কোনও লকডাউন নেই। কিন্তু স্বাধীনতা দিবস-সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠান রয়েছে। সে দিকে খেয়াল রেখেই লকডাউনের দিন ঘোষণা করা হবে বলে দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ সোমবার রাতে জানান। তার পরের সপ্তাহে রাজ্যের লকডাউন যে হেতু বৃহস্পতি এবং শুক্রবার, সে ক্ষেত্রে রবি এবং মঙ্গলবার লকডাউনের দিন ঘোষণা করতে পারে বলেই পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষ এলাকায় এলাকায় প্রচার করবেন, বাজারে যেন মানুষ ভিড় না করেন। ঘোষণা করা হবে, সোমবার যাঁরা বাজারে যাবেন, তাঁরা যেন ফের বুধবারের বাজারে ভিড় না করেন। এক জন ব্যক্তি সপ্তাহে দু’দিন বাজারে গেলে ভিড় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এলাকার স্থানীয় দোকানগুলি থেকে স্বেচ্ছাসেবীদের দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে।