জমজমাট: রোদের তেজ কমতে গড়িয়াহাটের সেলের বাজারে জমল ভিড়। রবিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
দিনভর প্রখর রোদে তাল কাটল চৈত্রের ছাড়ের (সেলের) বাজারে। বিকেলে রোদের তেজ কমতে দোকানে ভিড় হলেও বাজারের সেই চেনা ছবির দেখা মিলল না। তাই চৈত্রের শেষ রবিবারে বিক্রিবাটার এমন হালে হতাশ বিক্রেতাদের একাংশ। কেউ দুষলেন আবহাওয়াকে, কেউ আবার এ জন্য কাঠগড়ায় তুললেন অনলাইন বিকিকিনির অভ্যাসকে।
দিন কয়েক ধরেই শহরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। তবু চৈত্রের শেষ রবিবারে ভিড় জমবে বলেই ভেবেছিলেন হাতিবাগান, গড়িয়াহাটের দোকানিরা। ছুটির দিনে নববর্ষের কেনাকাটা করতে মানুষ বাজারমুখী হবেন বলেও আশা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তীব্র রোদের দাপটে দিনভর ঘরবন্দিই রইল শহরবাসীর একটা বড় অংশ। তবে বিকেলের দিকে রোদ কমায় বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকলে কিছুটা হলেও হাসি ফিরল বিক্রেতাদের।
এ দিন দুপুরে হাতিবাগান বাজারে গিয়ে দেখা গেল, কার্যত খাঁ খাঁ করছে গোটা এলাকা। যদিও বিকেলের দিকে দ্রুত বদলাতে থাকে ছবি। নববর্ষের সঙ্গে সঙ্গে ইদের কেনাকাটা করতেও দোকানে ভিড় জমতে দেখা যায়। কুর্তির পসরা নিয়ে বসা বিক্রেতা যতীন প্রসাদ বলেন, ‘‘সকাল থেকে মাছি তাড়াচ্ছি। দুপুরের পরে একটু কেনাকাটা শুরু হয়েছে। তবে আগের মতো বাজার আর নেই, ঘরে বসেই কেনাকাটা হয়ে যাচ্ছে।’’ ‘সেল সেল’ বলে গলা ফাটানোর মধ্যেই আর এক বিক্রেতা গোপাল সাহা বললেন, ‘‘ক্রেতাদের আর দোষ কোথায়? সকাল হলেই যা রোদ, ঘরে বসে থাকবেন না তো আর কী করবেন? সেলের বাজারের যা কেনাকাটা হচ্ছে, তা ওই বিকেল থেকে সন্ধ্যের মধ্যে।’’
একই ছবি গড়িয়াহাটেও। দিনভর মোটামুটি ফাঁকা থাকলেও বিকেলের পরে ভিড় জমতে দেখা যায় সেখানে। একটি পাঞ্জাবির দোকানে দরদাম করতে ব্যস্ত, বালিগঞ্জের সায়নী দেবনাথ বললেন, ‘‘অন্য বার দুপুর দুপুর কেনাকাটা করতে বেরোই, এ বার রোদে সে সাহস দেখায়নি। বিকেলে বেরিয়েও ঘামতে হচ্ছে। যা অবস্থা, বেশি ঘুরতে পারব বলে মনে হয় না।’’
তবে হাতিবাগান, গড়িয়াহাটে মূলত বিকেল থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়লেও কিছুটা ভিন্ন ছবি দেখা গেল নিউ মার্কেটে। এ দিন সকাল থেকেই জমজমাট ছিল নিউ মার্কেট চত্বর। বিক্রেতাদের চেনা চিৎকারে কার্যত কান পাতা দায়! বিকেল গড়াতে ভিড় বাড়ল কয়েক গুণ। ভিড় ঠেলে দোকানে ঢুকে এক ক্রেতা বললেন, ‘‘দোকানে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটাতেই তো মজা! সারা বছর ঘরে বসেই সব হয়, বছর শেষে এটুকু না হয় ঘেমেনেয়েই হল!’’