জল-গাড়ি: তৃষ্ণা মেটাতে যাত্রা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
জলপ্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবু মিষ্টি জলের স্বাদ এখনও স্বপ্ন পানিহাটিবাসীর। ফলে গরম পড়তেই পুর-এলাকা জুড়ে জলকষ্টের চেনা ছবিটি ফিরে এসেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নেমেছে পানিহাটি পুরসভার ৩৫টি জলের গাড়ি। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতি দিন সকাল থেকে শুরু হচ্ছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল দেওয়া। এলাকায় জলের গাড়ি ঢোকার আগেই বালতি, হাঁড়ি, বোতল নিয়ে হাজির হচ্ছেন বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে বিরক্ত বাসিন্দারা। বাসিন্দা সত্যেন্দ্রনাথ দাসের বক্তব্য, ‘‘২৪৬ কোটি টাকাটা সত্যি জলেই গেল! প্রকল্পের জলই পেলাম না!’’
এ দিকে, প্রকল্পের জল চালু না হওয়ায় পানিহাটি এলাকায় মাটির নীচ থেকে জল তোলাও বন্ধ হয়নি। গরম পড়তেই নামতে শুরু করেছে জলস্তর। পুরসভা সূত্রে খবর, ৪, ১৭, ২০, ২২-২৯ এবং ৩১-৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে জলকষ্ট খুব বেশি। রামচন্দ্রপুর, সিমলানগর, দক্ষিণায়ন, উষুমপুর বটতলা, আজাদহিন্দ নগর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জলের হাহাকার শুরু হয়েছে। কোথাও এক বার কোথাও বা তার বেশি জলের গাড়ি যাচ্ছে।
জল সমস্যার কথা মানছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। উপপ্রধান তৃণমূলের মলয় দাস বলেন, ‘‘জলপ্রকল্প নিয়ে যথেষ্ট সমস্যা। ওই জল পাচ্ছেন না মানুষ। এ দিকে জলস্তর নামায় জলকষ্ট বাড়ছে। কিছু ওয়ার্ডে তিন-চার মাস ধরে সঙ্কট চলছিল। গ্রীষ্ম পড়তেই নতুন নতুন নাম তালিকায় যোগ হচ্ছে।’’
পুরসভার দাবি, প্রকল্প করেছে কেএমডিএ। এ ব্যাপারে তারাই বলতে পারবে। কেএমডিএ সূত্রের খবর, ওভারহেড রিজার্ভার এবং সরবরাহ লাইনের মাঝের ভাল্ভগুলি ঠিক মতো খাপ না খাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় প্রযুক্তিগত সমস্যা আছে।
পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পানিহাটি পুরসভার পক্ষ থেকে না বললেও এই নিয়ে অভিযোগ এসেছে আমার কাছে। কেএমডিএ-র কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছি। তা জমাও পড়েছে। নির্দেশ দিয়েছি দ্রুত বিষয়টি দেখতে।’’